Parambrata Chatterjee: ‘বুদ্ধিজীবী শব্দটা একটা গালাগালিতে পরিণত হচ্ছে’, রাগে গর্জে উঠলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়

Recruitment Scam: সম্প্রতি রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে দুর্নীতির চেহারা উঠে এসেছে, তাতে একাংশের বুদ্ধিজীবীরা কেন চুপ তা নিয়ে মুখ খুলেছেন। দেখুন কী বললেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

Parambrata Chatterjee: 'বুদ্ধিজীবী শব্দটা একটা গালাগালিতে পরিণত হচ্ছে', রাগে গর্জে উঠলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Updated on: Jul 30, 2022 | 7:12 AM

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়

প্রথমত বলি, বুদ্ধিজীবীদের কথায়-কথায় কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর যে অভ্যেসটা আমরা করছি, সেটা বন্ধ হোক। এটা করার ফলে যেটা হচ্ছে, ক্রমে আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বাতাবরণে ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটা একটা গালাগালিতে পরিণত হচ্ছে। সেটা তো হওয়ার কথা নয়। বুদ্ধিজীবীরা সমাজের খুব জরুরী একটা অঙ্গ। তাঁরা সমাজের শিক্ষার দিক তৈরি করেন। যার আজকে বড় অভাব সারা ভারতবর্ষে। যত আমরা বুদ্ধিজীবী শব্দটাকে গালাগালে পরিণত করব এবং কথায়-কথায় বুঝিজীবীরা এটা করলেন না কেন, অমুকটা করলেন কেন, বুদ্ধিজীবীরা এই সময় নীরব কেন, ওই সময় কেন ‘সা-রে-গা-মা’ বলেছিলেন.. ইত্যাদি যতবার এ সব বলব, ততই বুদ্ধিজীবী শব্দটা গালাগালে পরিণত হবে।

দ্বিতীয়ত বলি, এসএসসি নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে, অর্থাৎ, এসএসসি স্ক্যাম; তাতে বুদ্ধিজীবী, শ্রমজীবী, যে কোনও জীবীরই সমালোচনা করা দরকার এবং মানুষ করছেনও। ব্যাপারটা অত্যন্ত নক্কারজনক। বিশেষ করে যেখানে এতগুলো মানুষের চাকরি জড়িত। শিক্ষাখাতে যাঁরা চাকরি চেয়েছেন, তাঁদের বদলে অন্য লোক যদি চাকরি পেয়ে থাকেন, সেখান থেকে যদি এই পরিমাণ অর্থ উপার্জন হয়ে থাকে, সেটা অত্যন্ত বড় অন্যায়। সেটার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণভাবে জোর গলায় প্রতিবাদ-আন্দোলন-নিন্দা হওয়া দরকার। যেটা আমার মনে হয় বর্তমানে রাজ্যে হচ্ছে।

এবং এক্ষেত্রে আমি আবারও বলছি, ভারতবর্ষের গোটা সিস্টেমে পরতে-পরতে তৈরি হওয়া দুর্নীতিকে আমরা নর্মালাইজ় করে ফেলেছি। বিষয়টা আমরা আমাদের স্বাভাবিক হিসেব নিকেষের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেছি। আমরা কখনও ইউপিতে দেখি, কারওর বাড়ি থেকে ২৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। কখনও বা আমরা রাজ্যে দেখতে পাই, প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। অন্য প্রদেশে অন্য স্ক্যাম হতে দেখি, এখানে এসএসসি স্ক্যাম হতে দেখছি।

এই যে দুর্নীতির কালকুঠুরি, এর মধ্যে আমাদের দেশ এবং আমি বলব আমাদের উপমহাদেশ ঢুকে পড়েছে। এখান থেকে বেরনোর জন্য একটা শুদ্ধিকরণ প্রয়োজন। সেটা কীভাবে হবে আমার জানা নেই। তবে আপাতত নিজের জায়গায় যে দুর্নীতি দেখছি, সেটার বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে প্রচণ্ডভাবে কঠোর নিন্দে এবং শাস্তি হওয়া দরকার। একদা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ব্যাপারটার মধ্যে জড়িত বলে মনে হচ্ছে। তাঁকে অপসারিত করা হয়েছে সমস্ত পদ থেকে। সেটা অত্যন্ত ওয়েলকাম পদক্ষেপ। আমার মনে হয় এই দুর্নীতি আর কোন-কোন খাতে আছে, কোথায়-কোথায় ঢুকে আছে, সেগুলো খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কেবল বাংলায় নয়, গোটা দেশে। কেউ ধোয়া তুলসীপাতা নয়। আজ অনেকে অনেক কথা জোর গলায় বলছেন। কিন্তু আমি মনে করি, আমাদের দেশে রাজনীতি মানেই দুর্নীতি। এটা আমরা শিখে গিয়েছি। এবং সেই দুর্নীতি থেকে কেউ থেকে দূরে নেই। কেউ ব্যতিক্রম নন। ব্যতিক্রমের পারসেন্টেজ হয়তো ০.০১।

সামগ্রিকভাবে দুর্নীতির তেলে সিস্টেম চলছে। সেই তেল থেকে সিস্টেমকে বের করার উপায় আমার জানা নেই। তবে সমালোচনা করে যেতে হবে আমাদের রাজ্য এবং বৃহত্তর ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের জায়গায়। এটুকু আমার বিশ্বাস।