রেখার সারা শরীরে রং, অমিতাভ এগিয়ে গেলেন, জয়া হাতেনাতে ধরতেই সব শেষ…
অমিতাভের চোখেই সর্বনাশ দেখেছিলেন রেখা। যে সর্বনাশ, উলটপালট করে দিয়েছিল রেখার জীবন। আর অন্যদিকে, অমিতাভ ও জয়ার সংসারে দমবন্ধ এক পরিবেশ।

বলিউডের প্রেম নিয়ে কথা উঠলে অমিতাভ বচ্চন ও রেখার নাম যে তালিকার একেবারে প্রথমে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। কেননা, অমিতাভ ও রেখার প্রেম যতটা ভালোবাসায় জড়ানো, তার থেকেও বেশি অপেক্ষা, নিরাশা, বিরহ অপূর্ণতার। হ্য়াঁ, অমিতাভের চোখেই সর্বনাশ দেখেছিলেন রেখা। যে সর্বনাশ, উলটপালট করে দিয়েছিল রেখার জীবন। আর অন্যদিকে, অমিতাভ ও জয়ার সংসারে সেই রেখার প্রসঙ্গ এখনও নিষিদ্ধ!
রেখা ও অমিতাভের প্রেমের চোরা স্রোত শুধু সে সময়ের গসিপ ম্যাগাজিন নয়, বুঝতে পেরেছিলেন জয়া বচ্চনও। তাই হয়তো, হাভেভাবেই নানা ফিল্মি পার্টিতে জয়া বুঝিয়ে দিতেন রেখাকে তাঁর মোটেই পছন্দ নয় এবং রেখা যে তাঁর সংসার ভাঙতে চলেছেন, সে আঁচও পেয়েছিলেন জয়া। কিন্তু জয়া বরাবরই সংসার আঁকড়ে থাকতে ভালোবাসেন, বচ্চন পরিবারের মেরুদণ্ড হয়েই থাকতে চান। তাই হয়তো, রেখা ও অমিতাভ কিসসা বাড়তে থাকলে, জয়া নেন এন্ট্রি। আর সেই প্রথম প্রবেশেই বাজিমাত করে নেন। দূরত্ব বাড়ে রেখা ও অমিতাভের মধ্যে।
রেখা ইস্যুতে অমিতাভ বরাবরই চুপ থাকতেন। জয়ার সঙ্গে কোনওরকম বচসায় যেতেন না। সেই সময়ের বিনোদন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জয়ার কথাতেই রেখার সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন অমিতাভ। শোনা যায়, জয়া নাকি বিচ্ছেদের হুমকিও দিয়েছিলেন। আর এসবের সূত্রপাত সিলসিলা ছবির শুটিং ফ্লোর।
কথায় আছে কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। অমিতাভ, রেখা ও জয়ার জীবনে ঝড় উঠলেও, পরিচালক যশ চোপড়া কিন্তু এই ত্রিকোণ প্রেমের কিসসাকে ছকে নিয়েছিলেন সিনেমার চিত্রনাট্যে। তৈরি হয় সিলসিলা। এই ছবির শুটিংয়েই এই তিন তারকার গণ্ডগোল আরও বেশি প্রকট হয়।
রং বরষে ভিগে চুনারিয়া গানের শুটিং চলছিল। ক্য়ামেরার সামনে শট বুঝে নিচ্ছিলেন রেখা,অমিতাভ, জয়া, সঞ্জীব কুমার। যশ চোপড়া বললেন, অ্যাকশন! হাতে রং নিয়ে রেখার দিকে ছুঁড়ে মারলেন অমিতাভ। রেখার শরীর জুড়ে রং। তাঁর চুড়িদারে রঙের খেলা। হঠাৎই কাট বললেন পরিচালক। হ্য়াঁ, গানটি অল্প শুট হতেই বিরতি।
সেই সময় এক বিনোদনমূলক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই গানের শুটিংয়ের সময়ই ক্য়ামেরার পিছনে অমিতাভ ও রেখাকে হাতে নাতে ধরে ফেলেছিলেন জয়া বচ্চন। শোনা যায়, শুটিংয়ের বিরতিতেই শুটিং টিম থেকে অনেকটাই দূরে গিয়ে একান্তে কথা বলেছিলেন রেখা ও বিগ বি। বিষয়টা নজরে আসে জয়ার। অমিতাভ ও রেখার একান্তে গল্প করাটা মোটেই ভালোভাবে নেননি জয়া। কিন্তু কী উপায়, ছবির শুটিংয়ের স্বার্থে সেই সময় চুপ থাকেন।
গুঞ্জনে এসেছিল, সিলসিলা ছবির প্রথম স্ক্রিনিংয়ে নাকি রেখার কারণেই হাজির হননি জয়া। এমনকী, অমিতাভকে জয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন রেখার সঙ্গে আর ছবি না করতে। যশ চোপড়ার সিলসিলাই তাই হয়ে যায় অমিতাভ ও রেখা জুটির শেষ ছবি। রেখা, অমিতাভ ও জয়ার বাস্তবের ত্রিকোণ প্রেমকে নিয়ে পটু হাতে গল্প বুনেছিলেন যশ। আর এই ছবিতে এই তিন তারকার অভিনয় যেন, বাস্তবকেও হার মানায়। সিলসিলা বক্স অফিসে কামাল দেখায়। কিন্তু অমিতাভকে হারিয়ে রেখার জীবনের ঝড় টের পেয়েছেন শুধুই রেখা। বচ্চন পরিবারে শুধুই নিস্তব্দতা।





