AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

অ্যাডাল্ট ছবিতে উত্তম কুমার, যৌনরোগের শিকার নায়িকা মঞ্জু দে! হইচই ফেলেছিলেন মহানায়ক

বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তখন সদ্য পা দিয়েছেন উত্তম। সেই অর্থে বেশ নতুনই ছিলেন তিনি। সিনেমার জগতে নতুন হয়েও সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উত্তম কুমার। সেই সময় উত্তম কুমারের এই কাণ্ড নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছিল।

অ্যাডাল্ট ছবিতে উত্তম কুমার, যৌনরোগের শিকার নায়িকা মঞ্জু দে! হইচই ফেলেছিলেন মহানায়ক
| Updated on: Feb 24, 2025 | 3:34 PM
Share

সময়টা ১৯৫২ সাল। ১৫ আগস্ট। একই দিনে কলকাতার ঐহিত্যবাহী তিন সিনেমা হল উত্তরা ,পূরবী ও উজ্জ্বলাতে মুক্তি পায় মহানায়ক উত্তম কুমার, মঞ্জু দে অভিনীত ছবি ‘কার পাপে?’ বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তখন সদ্য পা দিয়েছেন উত্তম। সেই অর্থে বেশ নতুনই ছিলেন তিনি। তবে প্রথম থেকেই উত্তম চাইতেন, এমন ছবিতে অভিনয় করতে, যা দর্শক মনে দাগ কাটবে। ‘কার পাপে?’ সেই অর্থে তেমনই এক ছবি। এই ছবি সেই সময়, শুধুই দর্শক মনে দাগ কাটেনি, হইচই ফেলে দিয়েছিল। বিতর্কও উঠেছিল প্রচুর। এই ছবির বিষয় নির্বাচন এতটাই প্রাপ্তমনস্ক ছিল যে, ছবিটি সেন্সর বোর্ড থেকে A সার্টিফিকেট পেয়েই মুক্তি পেয়েছিল। সেই অর্থে মহানায়ক উত্তম কুমারের একমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ছবি হল ‘কার পাপে?’

তবে শুধু উত্তম নন, এই ছবির অন্যান্য স্টারকাস্টও ছিল চোখ ধাঁধানো। মঞ্জু দে, ছবি বিশ্বাস, অসিতবরণ, রেণুকা রায়, রেভা দেবী, অনুপম ঘটক। সেই সময়, উত্তম কুমারের তুলনায় অন্যান্যরা দাপিয়ে অভিনয় করছেন টলিউডে। এই ছবির নায়ক ছিলেন অসীত বরণ। বিপরীতে ছিলেন মঞ্জু দে। উত্তম ছিলেন সহঅভিনেতা। তবুও অসীত বরণ ও মঞ্জু দের পাশে পর্দায় উজ্জ্বলতা কম ছিল না তাঁর।

‘কার পাপে?’ ছবিটা আসলে মূলত অভিনেত্রী কেন্দ্রীক ছবি। মঞ্জু দেই ছিলেন এই ছবির মূল কাণ্ডারী। সেই সময় দাঁড়িয়ে এমন বিতর্কিত বিষয়ে অভিনয় করে রীতিমতো চমকে দিয়েছিলেন তিনি।

সেই সময়ের ফিল্ম সমালোচকরা নানা পত্র-পত্রিকায় লিখেছিলেন, কার পাপে? এমন এক ছবি যা কিনা শুধুই স্টারকাস্ট নয়, বিষয় নির্বাচনের জন্য বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মাইলস্টোন হয়ে থাকে। তবে ১৯৫২ সালে এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর, বিশেষ করে ১৫ আগস্টের মতো দিন, এই সাহসী ছবি মুক্তি পাওয়ায়, পরিচালক কালী প্রসাদ ঘোষকে শুনতে হয়েছিল নানা বিদ্রুপ, নানা কটাক্ষ। সেই সময় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একাংশ তো কার পাপে? ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করারও ডাক দিয়েছিলেন। তবে পত্র-পত্রিকা মারফত, পরিচালক কালী প্রসাদ স্পষ্ট জানিয়ে ছিলেন, এই ছবির বিষয়বস্ত সমাজকে সচেতন করার জন্যই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। যে সময় পর্দায়, বাংলা সাহিত্যের নানা উপন্যাসকে তুলে ধরছেন অন্যান্য পরিচালক কিংবা মুক্তি পাচ্ছে উত্তম কুমারেরই আরেক ছবি বসু পরিবার- মতো ছবি। সেই সময় পর্দায় যৌনরোগকে বিষয় বানিয়ে ছবি, সত্যিই ছিল এক সাহসী পদক্ষেপ।

‘কার পাপে?’ ছবি কেন A সার্টিফিকেট পায়? কী এমন রয়েছে এই ছবিতে?

এই ছবিতে যৌনরোগ সিফিলিসকে বিষয় বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই যৌনরোগকেই প্রেক্ষাপটে রেখে, এক মহিলার সঙ্কট, নির্যাতনকে সামনে এনেছিলেন পরিচালক কালী প্রসাদ। সেই সময় যৌনতা নিয়ে সেভাবে খুল্লমখুল্লা কথা বলতেন না কেউ। এবং বহুগামীতার মতো বিষয়, সমাজে উপস্থিত থাকলেও, লোকচক্ষুর আড়ালেই চলত তা নিয়ে আলোচনা। এমনকী, যৌনরোগের চিকিৎসাও ছিল খুবই ব্যয়বহুল। ডাক্তাদের কাছেও যেতে অনীহা চোখে পড়ত। তাই কার পাপে? ছবি মুক্তির পর থেকেই আলোড়ন তুলেছিল। সেই সময় দাঁড়িয়ে পরিচালক কালী প্রসাদের এই ছবি নারীদের প্রতিবাদী কণ্ঠ হয়ে উঠেছিল।