প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা তথা নাট্যকার মনোজ মিত্র। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মঙ্গলবার অর্থাত্ ১২ নভেম্বর সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তখন TV9 বাংলাকে অভিনেতার মেয়ে ময়ূরী মিত্র জানিয়েছিলেন তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। হার্ট ঠিক করে পাম্প করছে না। ওষুধের সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। তার পর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ গোটা চলচ্চিত্র জগত্। সমাজমাধ্যমের পাতায় অভিনেতা অভিনেত্রীরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রয়াত অভিনেতার উদ্দেশ্যে।
উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলাদেশের খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার ধুলিহর গ্রামে জন্ম হয় তাঁর। অভিনেতার বাবা অশোককুমার মিত্র এবং মা ছিলেন রাধারাণী মিত্র। প্রয়াত অভিনেতার বাবা গ্রামের প্রথম বি.এ পাশ ছিলেন। স্বাধীনতার পর কলতায় চলে আসেন তাঁরা। কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজের ছাত্র ছিলেন মনোজ। একদিকে অধ্যাপনা এবং অন্য দিকে থিয়েটার দুদিকেই সমান আগ্রহ ছিল তাঁর। তাই অভিনেতা চেয়েছিলেন কলকাতার কাছের এমন কোনও কলেজে যোগ দিতে যেখানে চাকরি করতে করতে তাঁর থিয়েটার চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। যদিও তাঁর থিয়েটার করাতে একেবারেই মত ছিল না অভিনেতার বাবার।
যদিও পরবর্তীকালে দুই দিকই সমান তালে সামলেছেন তিনি। মনোজের তৈরি নাট্যদলের নাম ছিল ‘ঋতায়ন’। যেখানে তিনি নাট্যকার এবং নির্দেশক দুই ছিলেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ‘অবসন্ন প্রজাপতি’, ‘নীলা’, ‘মৃত্যুর চোখে জল’, ‘সিংহদ্বার’, ‘ফেরা’-সহ আরও অনেক নাটক। এছাড়াও বহু বহু বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। খলনায়ক হিসাবেও তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। তাঁর অভিনীত বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি হল ‘বাঞ্ছারামের বাগান’, ‘শত্রু’, ‘তিন মূর্তি’, ‘দামু’ প্রমুখ। বহু দিন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্য বিভাগে অধ্যাপক হিসাবে পড়িয়েছেন। ২০০৩ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।