‘ভিক্টো আগেও রিহ্যাবে ছিল…’ নেশামুক্তি নিয়ে TV9 বাংলায় কলম ধরলেন অনিন্দ্য

আমি নেশার সমস্যা থেকে বেরিয়েছি বলে আর কোনওদিন কোনও পার্টিতে নেশার জিনিস ছুঁয়ে দেখিনি। যেসব বন্ধুদের সঙ্গে বড় হয়েছি, তাঁদের অনেককে দেখি এমন নেশা করেছেন, শুটিং থেকে বাদ পড়েছেন। কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে অনেকের। পুরোনো আমলেও এই সমস্যা ছিল। মহুয়া রায়চৌধুরীর যেমন প্রতিভা ছিল, তেমনই নেশা করার সমস্যা ছিল বলে শুনেছি।

ভিক্টো আগেও রিহ্যাবে ছিল... নেশামুক্তি নিয়ে TV9 বাংলায় কলম ধরলেন অনিন্দ্য

| Edited By: জয়িতা চন্দ্র

Apr 08, 2025 | 3:07 PM

ঠাকুরপুকুর দুর্ঘটনা কাণ্ডে সরগরম নেটপাড়া। কটাক্ষের বন্যা বইছে ইন্ডাস্ট্রিকে নিয়ে। ক্ষোভে ফুঁসছেন অন্দরমহলের সদস্যরা। ‘ইন্ডাস্ট্রি মোটেও এমন নয়’, মুখ খুলছেন একাধিক তারকারা। প্রসঙ্গ এড়াচ্ছে না ‘নেশা’। এবার সেই বিষয় নিয়েই কলম ধরলেন অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। যে কঠিন লড়াই লড়ে তিনি আজ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন, সুস্থ জীবন যাপন করছেন, সেই বাস্তব ছবি আরও একবার উঠে এল তাঁর কলমে। বলছেন– রিহ্যাবটাই শেষ কথা নয়, লড়াইটা তার পরেও থেকে যায়…

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

সকালবেলা বন্ধুদের সঙ্গে ব্রেকফাস্ট খাচ্ছিলাম। তখন ফোন এল। একজন বন্ধু, যিনি ভিক্টোকে চেনেন, জানালেন দুর্ঘটনার বিবরণ। এরকম ঘটনা টলিপাড়ায় নতুন কিছু নয়। আগেও ঘটেছে। তার থেকে সকলে শিক্ষা নিতে পারেননি। এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্নজন সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার কথা বলছেন। কার শাস্তি দরকার, কাকে বয়কট করা দরকার এমন অনেক কথা। তাঁদের এমন ভাবনা যেরকম জরুরি, তেমনই জরুরি, নেশার দুনিয়ায় প্রবেশ করার বিষয়টা যেন আমরা রুখে দিতে পারি। আমি এক সময়ে নেশায় ডুবে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর নতুন জীবন পেয়েছি। সেই জীবন ঠিক রাখতে এমন কিছু করি না, যাতে পান থেকে চুন খসে। কেউ নেশা করবেন না, এমন একটা লাইন বলে দেওয়ার মানে নেই। ভারতে কিছু নেশা করার অনুমতি আইন দেয়। তবে মাত্রা রাখা দরকার। ভিক্টো রিহ্যাবে ছিলেন। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন। তারপর আবার যে এরকম নেশা করছেন, সেটা জানতাম না। টলিউড এমন একটা জায়গা, যেখানে প্রতি সপ্তাহে কোনও না কোনও পার্টি হয়। সেখানে মদ্যপানও হয়। মদ্যপান করে গাড়ি চালাবেন না বলেই অনেকে ড্রাইভার নিয়ে যান।

কিন্তু আমি নেশার সমস্যা থেকে বেরিয়েছি বলে আর কোনওদিন কোনও পার্টিতে নেশার জিনিস ছুঁয়ে দেখিনি। যেসব বন্ধুদের সঙ্গে বড় হয়েছি, তাঁদের অনেককে দেখি এমন নেশা করেছেন, শুটিং থেকে বাদ পড়েছেন। কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে অনেকের। পুরোনো আমলেও এই সমস্যা ছিল। মহুয়া রায়চৌধুরীর যেমন প্রতিভা ছিল, তেমনই নেশা করার সমস্যা ছিল বলে শুনেছি। তাই এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু যদি কেউ নেশা করেন, দেখতে হবে, তাঁর পরিবার বা চারপাশের কারও সমস্যা হচ্ছে কিনা। তাঁর নেশা সংক্রান্ত মাত্রাজ্ঞান আছে কিনা, সেটা তিনি পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলেই বুঝে নিতে পারেন। এমন নেশার প্রবণতা থেকে টলিউড কী করে বেরোতে পারে, তা নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়ার দরকার। যদি নিজে বুঝতে পারেন যে আপনার নেশা করার বিষয়টা নিয়ে চারপাশের কেউ অভিযোগ করছেন, তা হলে একজন রিহ্যাবিলিটেটরকে অবিলম্বে যোগাযোগ করুন। এই ব্যাপারে অনেকে সংশয়ে ভোগেন। কোনও রকম সংশয় রাখবেন না। একবার সুস্থ হয়ে ফিরে আর কোনওদিন নেশা করবেন না। চারপাশে বন্ধুরা যাই করুন, মনে রাখবেন, তাঁরা টাল সামলাতে পারলেও, আপনি পারবেন না। নেশা ছাড়ার পর ডিপ্রেশন যাতে না হয়, ভালো জিনিসের মধ্যে থাকুন। জীবনযাত্রা ঠিক রাখুন। আমার মনে হয়, টলিপাড়ার মানুষরা বহু মানুষের কাছে উদাহরণ। তাই তাঁদের জীবনে আরও সংযমের প্রয়োজন অনুভব করছি।