মুম্বইয়ে বিলাসবহুল বাড়ি থাকা সত্ত্বেও, দেশজোড়া নাম হওয়ার সত্ত্বেও মাটির খুব কাছাকাছি থাকতেই ভালবাসেন গায়ক অরিজিৎ সিং। তিনি মুর্শিদাবাদের ছেলে। জন্মভূমি জিয়াগঞ্জ। এলাকার উন্নয়নের জন্য় নিজের উদ্যোগে অনেক কাজ করেন অরিজিৎ। বিদ্যালয় থেকে শুরু করে হাসপাতাল, খেলার মাঠ… সব কিছু নির্মাণের নেপথ্য নায়ক অরিজিৎ। তাঁর এই উদ্যোগকে বাহবা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
জিয়াগঞ্জে স্কুল তৈরি করবেন অরিজিৎ। তৈরি করবেন হাসপাতাল। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে একটি প্রশাসনিক সভায় বুধবার তেমনই ঘোষণা করেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই স্কুল-হাসপাতাল নির্মাণের জন্য জমিদান করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় উপস্থিত থেকে নিজেই সেই কথা জানিয়েছেন মমতা। বলেছেন, “অরিজিৎ অনেক ভাল কাজ করছে। ও জেলার গর্ব। ওকে আমি জমি অ্যাপ্রুভ করে দিয়েছি। ওই জমিতে অরিজিৎ স্কুল করবে, হাসপাতাল করবে। আরও অনেক কিছু তৈরি করবে ও।”
জঙ্গিপুরে অরিজিৎকে স্কুল-হাসপাতাল তৈরি করার জন্য যে জমি দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, সেটি রঘুনাথগঞ্জ থানার আওতায় পড়ে। জনবহুল ওই জায়গার চারপাশে রয়েছে বাজার, বড়-বড় রাস্তা। ওই জমি ঘিরে ইঁটের পাঁচিল নির্মিত হয়েছে সম্প্রতি। জমির আশপাশে মাঠও রয়েছে বড়-বড়। কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে স্কুল নির্মাণের কাজ। আপাতত যা খবর, তা হল: দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হবে অরিজিতের স্কুলে। জিয়াগঞ্জে নিজের মায়ের নামে একটি সংস্থা করেছেন অরিজিৎ। সেই সংস্থাকেই এই জমি দান করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জানা যাচ্ছে, প্রয়াত মা অদিতি সিংয়ের নামেই স্কুলের নামকরণ করতে চান অরিজিৎ।
বাঙালি মা এবং পঞ্জাব বাবার সন্তান অরিজিৎ জিয়াগঞ্জের বিজয় সিং স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অরিজিতের মা অদিতিদেবী। সেরে উঠলেও মাত্র ৫২ বছর বয়সে ব্রেন স্ট্রোকে মারা যান তিনি। অরিজিতের জিয়াগঞ্জের বাড়িতে এই মুহূর্তে থাকেন তাঁর বাবা কক্কর সিং ও বোন। ‘হেঁশেল’ নামের একটি ভাতের হোটেল চালান কক্কর সিং। জিয়াগঞ্জে শৈশব কাটিয়েছেন অরিজিৎ। এই মুহূর্তে সেই স্কুলেরই পরিচালন সমিতির সভাপতি তিনি। এলাকার ছোটদের জন্যই প্রাথমিকভাবে কাজ করতে চান অরিজিৎ। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে-থাকা একটি খেলার মাঠ পুনর্নির্মাণের দায়িত্বও নিয়েছেন ওই গায়ক। বহুকাল সংস্কারের অভাবে পড়ে রয়েছে মাঠটি। বাচ্চারা খেলতে পারত না সেখানে। অরিজিৎই উদ্যোগ নিয়ে সেটিকে খেলার যোগ্য করে তুলেছেন। সেই সঙ্গে সেখানে তৈরি হয়েছে একটি ক্রীড়াকেন্দ্রও। সেখানে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও স্থানীয় সূত্রে খবর।