
গত সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছিল বাংলা ছবি ‘ব্রহ্মার্জুন’। এই ছবিতে কাজ করেছেন রোহন ভট্টাচার্য, অনিন্দ্য সেনগুপ্ত, প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য। এই ছবি বক্স অফিসে ভালো ফল করতে ব্য়র্থ হয়েছে। একই সঙ্গে ছবিটা সমালোচনার মুখেও পড়েছে। পরিচালক সৌভিক দে ছবির সম্পাদনাতে যে পরিবর্তন এনেছেন, তা সম্পাদককে জানাননি, এমন অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিলেন সম্পাদক। ছবির সম্পাদক পবিত্র জানা চিঠিতে লিখেছেন,
”প্রিয়, এম. এস. ফিল্মস অ্যান্ড প্রোডাকশনস টিম,
আশা করি আপনি এবং আপনার টিম সুস্থ ও ভালো আছেন।
আমি এই চিঠির মাধ্যমে সদ্য প্রকাশিত ব্রহ্মার্জুন চলচ্চিত্রের (যা ২৩শে মে, ২০২৫-এ মুক্তি পেয়েছে, পরিচালনায় সৌভিক দে) চূড়ান্ত সম্পাদনা ও ক্রেডিট তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে একটি গুরুতর আপত্তি জানাচ্ছি।
আপনারা অবগত আছেন, আমি এই প্রজেক্টের ওয়েব সিরিজ ভার্সনের এডিটর হিসেবে কাজ করেছিলাম এবং পেশাদার মান বজায় রেখে, পূর্ব-চর্চিত সৃজনশীল নির্দেশনার ভিত্তিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ করেছিলাম।
কিন্তু আমি যখন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি নিজে দেখি, তখন নিশ্চিত হই যে এটি আমার অজান্তে, আমার কোনওরকম পরামর্শ বা অনুমতি ছাড়াই পরিচালক সৌভিক দে-র দ্বারা ব্যাপকভাবে রি-এডিটেড হয়েছে। এই অনুমতি ছাড়াই করা সম্পাদনার পরও চলচ্চিত্রের অফিসিয়াল ক্রেডিটে আমাকে “এডিটর” হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং আমার পেশাগত জীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ইতিমধ্যে অনেকেই আমাকে ফোন ও বার্তা পাঠিয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ভার্সনের দুর্বল সম্পাদনার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, এবং আমি একটি এমন কাজের জন্য দায়ী হচ্ছি, যা আদৌ আমার নয়। এই ভুল উপস্থাপন আমার ইন্ডাস্ট্রিতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে এবং বর্তমানে আমার চলমান কেরিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে—দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট এরই মধ্যে হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চলচ্চিত্র ও টিমের প্রতি সম্মানবোধ থেকে আমি এতদিন বিষয়টি প্রকাশ্যে তোলার প্রয়োজন মনে করিনি। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে পেশাগত ক্ষতি হচ্ছে, তাতে আমি নিজেকে আর চুপ রাখতে পারছি না।
অতএব, আমি স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি:
ব্রহ্মার্জুন সিনেমার চূড়ান্ত থিয়েটার ভার্সনে আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।
চূড়ান্ত সম্পাদনা আমার অনুমতি বা সম্মতি ছাড়াই করা হয়েছে।
আমি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করছি, আমার নাম অবিলম্বে চলচ্চিত্রের সকল ভার্সনের (ডিজিটাল, প্রিন্ট, ও প্রচারমূলক) ক্রেডিট লিস্ট থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।
আমি আশা করি আপনি এই বিষয়টি যথোপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এবং ভুলভাবে নাম উল্লেখের এই বিষয়টির দ্রুত সংশোধন করবেন। অনুগ্রহ করে লিখিতভাবে নিশ্চিত করুন যে ভবিষ্যতে ব্রহ্মার্জুন চলচ্চিত্রের কোনও মাধ্যমেই আমার নাম আর ব্যবহার করা হবে না। আপনার দ্রুত পদক্ষেপ ও প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশায় রইলাম।”
এই বিষয়ে পরিচালককে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, ”ছবিটার এডিটিং সময় অভাবে পবিত্র জানা দেখতে পারেননি। তখন আমাদের তাড়া ছিল। তাই দেখানোর সময় হয়নি। এখন উনি ছবি থেকে নামটা সরিয়ে নিতে চাইছেন। এতে আমার আপত্তি নেই। ওয়েব সিরিজে উনি নামটা রাখতে চান। আমরা মিটিং করে বিষয়টা আলোচনা করে নেব।”