Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

চারাগাছ হয়ে বেঁচে থাকবে ঐন্দ্রিলা শর্মা, অভিনেত্রীর জন্মদিনে মায়ের বুকচাপা কান্না

Aindrila Sharma 26th Birthday: দু'বার ক্যানসারকে হারিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবস। দু'বছর আগে জন্মদিনের ঠিক আগের দিন, বিশ্ব ক্যানসার দিবসে, ক্যানসারজয়ী ঐন্দ্রিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে একটি একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিবেদককে। সেখানে তিনি অনেক কথা বলেছিলেন তাঁর লড়াই সম্পর্কে। লড়াইয়ে তাঁর পাশে থাকার ঋণ স্বীকার করে নিয়েছিলেন পরিবার এবং প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীর প্রতি।

চারাগাছ হয়ে বেঁচে থাকবে ঐন্দ্রিলা শর্মা, অভিনেত্রীর জন্মদিনে মায়ের বুকচাপা কান্না
ঐন্দ্রিলা শর্মা।
Follow Us:
| Updated on: Feb 05, 2024 | 11:54 AM

ঐন্দ্রিলা শর্মা। বাংলা বিনোদন জগতের ঝকঝকে এক তারকা। তিনি এখন সত্যিই আকাশের তারা। না-ফেরার দেশে এক সরু রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন হয়তো সুদীর্ঘ পথ। তাঁর চেনা ভুবন ভোলানো হাসি মেখে…। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর হাজার-হাজার দর্শকের চোখে জল এনে ধরিত্রীর বুক থেকে চিরবিদায় নিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। বেঁচে থাকার ইচ্ছা যাঁর ছিল প্রবল। দু-দু’বার ক্যানসারকে হারিয়ে বিজয়ী ঐন্দ্রিলা হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোকে ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ হয়ে যান। আজ সেই ঐন্দ্রিলার জন্মদিন। ২৬ বছরের জন্মদিন। মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে সকাল থেকে বসে অঝর কান্নায় ভেসে গেলেন তাঁর মা শিখা শর্মা। সকাল সাতটা উনত্রিশ মিনিটে TV9 বাংলার প্রতিবেদক যোগাযোগ করতেই শিখাদেবী বলে বসলেন, “ঘড়িতে সাতটা চৌত্রিশ মিনিটের অপেক্ষায় আছি আমি। সকালবেলার ওই সময়টায় আমার মেয়ে জন্মেছিল। আর পাঁচ মিনিট পরই আমার মেয়েটা পৃথিবীর আলো দেখেছিল। এখন ও কোন অন্ধকারে বসে আছে কে জানে… আমার মেয়েটার আজ ২৬ বছরের জন্মদিন। থাকলে কত কী হত বাড়িতে। ও আমাদের এবং নিজের জন্মদিন পালন করতে ভালবাসত।”

শিখাদেবী নিজে ক্যানসারে আক্রান্ত। মেয়ে ঐন্দ্রিলার মতো তাঁরও দ্বিতীয়বার ক্যানসার হয়েছে। ওরাল কেমো-থেরাপি চলছে তাঁরও। দুঃখ করে বলেছেন, “আমাকেই তো নিতে পারত ঠাকুর। আমার মেয়েটাকে কেন নিয়ে নিল।”

ঐন্দ্রিলার গোটা পরিবারই ডাক্তারদের। শিখাদেবী নিজে নার্স। তাঁর স্বামী, অর্থাৎ ঐন্দ্রিলার বাবা উত্তম শর্মা ডাক্তার। ঐন্দ্রিলার দিদি ঐশ্বর্যও ডাক্তার। TV9 বাংলার প্রতিবেদককে শিখাদেবী জানালেন, তাঁর নার্সিং স্কুলে আজ বৃক্ষরোপণ হবে। ঐন্দ্রিলার যেহেতু ২৬ বছর বয়স হল আজ। তাই ২৬টি গাছ লাগান হবে। একই পরিকল্পনা ঐন্দ্রিলার বাবার হাসপাতালেও। সেখানেও গাছ পোঁতা হবে ২৬টা। আর ঐন্দ্রিলার দিদি ঐশ্বর্য? তিনি সকাল-সকাল হাসপাতালে বেরিয়ে গিয়েছেন। স্টাফেদের মিষ্টি খাওয়াবেন। বোনের জন্মদিন হাসি মুখেই পালন করবেন দিদি। বোনের অভাব মেটানোর চেষ্টা করছেন ঐশ্বর্য। তিনিও এখন মডেলিং করছেন ছোটখাটো। যেমনটা পছন্দ ছিল ঐন্দ্রিলার।

দু’বার ক্যানসারকে হারিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবস। দু’বছর আগে জন্মদিনের ঠিক আগের দিন, বিশ্ব ক্যানসার দিবসে, ক্যানসারজয়ী ঐন্দ্রিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে একটি একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিবেদককে। সেখানে তিনি অনেক কথা বলেছিলেন তাঁর লড়াই সম্পর্কে। লড়াইয়ে তাঁর পাশে থাকার ঋণ স্বীকার করে নিয়েছিলেন পরিবার এবং প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীর প্রতি। ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষদের উদ্দেশে বলেছিলেন, “…প্রথমে বিশ্বাস করতে হয়, আমার জীবনটা আর পাঁচজন মানুষের মতো স্বাভাবিক নয়। মানতে হয়, যে আমার জীবনে স্ট্রাগল এসেছে। সেটা জয় করতেই হবে। আমি এটাই বলব, প্রত্যেকের জীবনে খারাপ সময় আসে এবং সেই খারাপ সময় চলেও যায়। আমি জানি খুব কষ্ট হয়। আমি নিজে পেয়েছি সেই কষ্ট। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতেই হবে। আমি বিশ্বাস করি রাতের পরে দিন আসে…”

রাতের পর দিন সত্যিই এসেছিল ঐন্দ্রিলা শর্মার জীবনে। কিন্তু সেই দিনের আলো বেশিক্ষণ জ্বালিয়ে রাখতে পারেনি ঐন্দ্রিলার প্রাণটাকে। মাত্র ২৪ বছরেই নিভে যায় সব বাতি। চিরকালীন অন্ধকারে আজ হয়তো তাঁকে বার্থ ডে কেকের মোমবাতি জ্বালিয়ে দিতে যাচ্ছেন কেউ-কেউ… সেই আকাশে আজ হয়তো বাজবে ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ’…