‘করোনেশন স্ট্রিট’, বিশ্বের দীর্ঘতম টিভি সোপ-অপেরা। ২১টি সিজনের এই টেলিসোপ আজ ৬০ বছর পূর্ণ করেছে। জমিয়ে চলছে তার সেলিব্রেশন। ১৯৬০ সালে ৯ ডিসেম্বর প্রথমবার দেখানো হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। ব্রিটেনের ওয়ার্কিং-ক্লাসের লোকজনের প্রতিদিনের জীবন সংগ্রাম নিয়েই এগিয়েছিল গল্প।
ঘটনার পটভূমি ছিল ম্যাঞ্চেস্টার। সেখানকার ওয়েদারফিল্ডের করোনেশন স্ট্রিটে (কাল্পনিক শহর) থাকতেন ওয়ার্কিং-ক্লাসের লোকজন। তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে কী কী ঘটনা ঘটত, ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে যেসব ওঠাপড়া লেগে থাকত এবং সেই সব সমস্যার সঙ্গে যুঝে, লড়াই করে কীভাবে তাঁরা বেঁচে থাকতেন সেইসবই দেখানো হয়েছে এই টিভি সোপ অপেরায়।
দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে চলছে এই ধারাবাহিক। আর তাই করোনা আবহে সামাজিক পরিবর্তন হলেও উদযাপনে খামতি নেই। ক্যাথিড্রালের ঘণ্টা বাজা থেকে শুরু করে পার্লামেন্টে আলোচনা এবং এই টিভি সোপের চরিত্রদের সম্মান জানাতে ডাকটিকিট প্রকাশ, সবই ছিল আজকের সেলিব্রেশনের অঙ্গ। ১৯৬০ সালে অন এয়ার হওয়ার সময় নির্মাতারা ভেবেছিলেন কয়েক মাস চলবে এই ধারাবাহিক। তবে ‘করোনেশন স্ট্রিট’ যে এভাবে টানা হিট দেবে প্রথমে এমনটা কল্পনাও করেননি নির্মাতারা। কমার্শিয়াল চ্যানেল আইটিভি-তে শুরুর দিন থেকেই ‘টপ রেটেড শো’-এর খেতাব পেয়েছিল ‘করোনেশন স্ট্রিট’।
আরও পড়ুন- বেশিরভাগ মানুষের কাছে সুন্দরের যা সংজ্ঞা, তার একটু এ দিক-ও দিক হলেই ট্রোলিং শুরু হয়ে যায়: জয়ীতা
তবে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে সম্প্রচার হওয়া টেলিভিশনের অনুষ্ঠান হওয়ার খেতাব জিতলেও বিবিসি রেডিওর ‘The Archers’-কে পিছনে ফেলতে পারেনি। বিবিসি-র এই রেডিও শোয়ের বয়স এখন ৭০ বছর। ১৯৫০ সালে এই শো শুরু হয়েছিল। তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে ব্রিটেনের দর্শকদের কাছে দুটো অনুষ্ঠানের চাহিদা আজও তুঙ্গে।
আর তাই অতিমারী করোনার দাপটকেও জয় করেছেন ‘করোনেশন স্ট্রিট’-এর নির্মাতা এবং কলাকুশলীরা। গত মার্চ মাস থেকে শ্যুটিংয়ের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে সকলকে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নানারকম কসরত করে শ্যুটিং চলেছে। লকডাউনের সমস্য অবস্থা ছিল সবচেয়ে সঙ্গিন। ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সেলিব্রেশনের জমজমাট পরিকল্পনার অনেকটাই বাদ দিতে হয়েছে। তবুও দর্শকদের ভালবাসার কথা মাথায় রেখেই হার মানেননি কেউ। শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়েও এগিয়েছে ‘করোনেশন স্ট্রিট’ আর সেখানকার মানুষগুলোর গল্প।