
ভারতের সঙ্গীত জগতে এ শোকের ছায়া যেন কাটার নয়। জনপ্রিয় গায়ক ও সুরকার জুবিন গর্গের অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ, অনুরাগীদের চোখের জল যেন থামার নয়। ২০২৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫২ বছর বয়সী এই শিল্পী। জুবিন গর্গ শুধু ‘ইয়া আলি’-র মতো সুপারহিট গান দিয়েই নয়, বরং ৩২ হাজারেরও বেশি গান গেয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। হিন্দি, অসমিয়া, বাংলা সহ বহু ভাষায় তাঁর কণ্ঠে বাঁধা গান আজও শ্রোতার হৃদয়ে গেঁথে আছে। অসমের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত গায়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন জুবিন।
অনেকেই হয়তো জানেন না, জুবিনের বিলাসবহুল গাড়ির প্রতি ছিল বিশেষ টান। তাঁর সংগ্রহের তালিকায় ছিল BMW X5, মার্সিডিজ বেঞ্জ, রেঞ্জ রোভার ভেলার এবং একটি কাস্টমাইজড ইসুজু SUV। প্রিমিয়াম বাইকও ছিল তাঁর বিশেষ পছন্দ। বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুসারে, প্রয়াণের সময় জুবিন গর্গের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
গান, কনসার্ট ও ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্ট থেকেই তিনি এই বিপুল পরিমান অর্থ আয় করেছিলেন। ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে তাঁর মাসিক আয় ছিল আনুমানিক ৩৩ থেকে ৪৬ লক্ষ টাকা। ১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের তুরাতে জন্ম জুবিনের। বাবা মোহিনী মোহন বরঠাকুর ছিলেন একজন গীতিকার এবং মা ইলি বরঠাকুর ছিলেন একজন নৃত্যশিল্পী। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ‘অনামিকা’ অ্যালবামের মাধ্যমে গানের জগতে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ২০০২ সালে ফ্যাশন ডিজাইনার গরিমা শইকিয়াকে বিয়ে করেন জুবিন।
জুবিন গর্গের আকস্মিক মৃত্যুতে সঙ্গীততজগতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তবে তাঁর সৃষ্টিসম্ভার বেঁচে থাকবে চিরকাল। আজও তাঁর মৃত্যু ঘিরে নানা জনের মনে নানা প্রশ্ন বর্তমানে। চলছে তদন্ত। একাধিকের দাবি, খুন করা হয়েছে গায়ককে। জুবিনের এই মৃত্যু যেন মেনে নেওয়ার নয়। পুলিশ যেমন তদন্ত চালাচ্ছেন, তেমনই পরিবারের পক্ষ থেকেও এই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানান প্রয়াস বর্তমান।