
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের মধ্যে সারা বিশ্বে অন্তত ১.৫৬ কোটি মানুষের জীবদ্দশায় গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার বা পেটের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই তালিকায় চিনের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।
এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে Nature Medicine পত্রিকায়। দেখা গিয়েছে, এই গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি রোগী থাকবে এশিয়ায়, এরপর থাকবে আমেরিকা এবং আফ্রিকা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার সংস্থা International Agency for Research on Cancer-এর গবেষকরা ১৮৫টি দেশের গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের তথ্য বিশ্লেষণ করেন GLOBOCAN 2022 ডেটাবেসের মাধ্যমে। এছাড়াও মৃত্যুহার ও জনসংখ্যার হারের পূর্বাভাস নেওয়া হয় United Nations-এর ডেমোগ্রাফিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে।
গবেষকরা বলেন, “এই জন্মবছরের গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১.৫৬ কোটি গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার কেস আশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে ৭৬ শতাংশ ঘটছে Helicobacter pylori নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে।”
এই Helicobacter pylori একধরনের সাধারণ ব্যাকটেরিয়া, যা পাকস্থলীতে দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ ঘটিয়ে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এই ক্যানসার বর্তমানে বিশ্বে ক্যানসার জনিত মৃত্যুর পঞ্চম প্রধান কারণ।
গবেষকরা জোর দিয়ে বলেন, গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার প্রতিরোধে আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন, বিশেষত জনস্বাস্থ্য পর্যায়ে স্ক্রিনিং এবং এই ব্যাকটেরিয়ার চিকিৎসা করা জরুরি। এটি কার্যকরভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরও জানান, অল্প বয়সিদের মধ্যে রোগের হার বেড়ে চলা এবং পাশাপাশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মৃত্যুহার কমানোর যে প্রচেষ্টা চলছিল, তা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গবেষকদের হিসেব অনুযায়ী, এশিয়ায় ভবিষ্যতে ১.০৬ কোটি নতুন গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের কেস দেখা যেতে পারে। এর মধ্যে কেবল ভারত ও চিনেই ৬৫ লক্ষেরও বেশি কেস হওয়ার সম্ভাবনা। ভারতে এই সংখ্যাটি হতে পারে ১৬,৫৭,৬৭০, যদি এখনকার গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার প্রতিরোধের নীতিতে কোনও পরিবর্তন না আনা হয়।
গবেষকদের মতে, যদি সময়মতো স্ক্রিনিং ও ব্যাকটেরিয়া চিকিৎসার মতো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের ঘটনা ভবিষ্যতে কেস ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।