যে কোনও তেলের বিজ্ঞাপনেই মূল টার্গেট করা হয় হার্টের রোগীদের। সকলেই বলেন, এই তেল খেলেই হার্ট থাকবে সুস্থ। তেল-মশলাদার খাবার বেশি খেলেই সেখান থেকে আসে একাধিক শারীরিক সমস্যা। যার মধ্যে রয়েছে হার্টের সমস্যাও। হার্ট এবং সামগ্রিক ভাবে সুস্থ থাকতে নিয়ম মেনে চলতে হবে। রোজকার ডায়েটে শাক-সবজির পরিমাণ বেশি রাখা, কার্বোহাইড্রেট কম পরিমাণে খাওয়া, ফল বেশি করে খাওয়া, পরিমিত জল খাওয়া এবং শরীরচর্চা প্রয়োজন। রান্নায় তেলের ভূমিকা আছেই। রান্নায় তেল বেশি দিলেই স্বাদ ভাল হয় না। বরং পরিমিত তেলে রান্না করলেই তবেই শরীর সুস্থ থাকে। সূর্যমুখীর তেলের ব্যবহার এখন সব বাড়িতেই হয়। এই তেলের মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা কিন্তু ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য একেবারেই ভাল নয়। কারণ এতে রক্তশর্করার পরিমাণ বাড়তে পারে। যে কারণে ক্যানোলা, অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো তেল এসব তেল হার্টের রোগীদের খেতে বলা হয়। কারণ এই তেলের মধ্যে ভাল ফ্যাট থাকে, যা হার্টকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও রান্নার সময় তেল ব্যবহার করার আগে মাথায় রাখুন কিছু পরামর্শ-
তেল খুব বেশি গরম করবেন না। এতে তেলের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড ভেঙে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক যৌগ তৈরি হয়। যা শরীরের জন্য একরকম বিষ।
ডিপ ফ্রাইয়ের জন্য সানফ্লাওয়ার অয়েল, নারকেল তেল বা সরষের তেল ব্যবহার করলে ভাল। তবে তেল থেকে ধোঁয়া ওঠা অবধি অপেক্ষা করবেন না।
আর তাই যে সব তেল হার্টের রোগীদের জন্য ভাল
অলিভ অয়েল- অলিভের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যে কারণে নিয়মিত ভাবে অলিভ অয়েল খেতে পারলে কমে ক্যানসার, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, অ্যালঝাইমার্সের সম্ভাবনা। অলিভ অয়েলের মধ্যে থাকে কিছুটা পরিমাণ হেলদি ফ্যাট, যা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে এড়ানো যায় হৃদরোগ।
সূর্যমুখীর তেল- সূর্যমুখীর বীজেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা হার্টের জন্য ভাল। এছাড়াও থাকে ফ্ল্যাভিনয়েড, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন। যা হার্টের সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। সানফ্লাওয়ার অয়েলের মধ্যে থাকে ভিটামিন ই। সব মিলিয়ে এই তেল খুবই পুষ্টিকর এবং হার্টের জন্যও সুরক্ষিত।
ক্যানোলা তেল- যাঁদের উচ্চরক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য খুব ভাল এই ক্যানোলার তেল। এর মধ্যে যে ফ্যাট সিরাম থাকে তা আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যে কারণে হৃদরোগীদের জন্য এই তেল খুবই ভাল। কিন্তু এই তেলও পরিমাণ মেপে খান। এতিরিক্ত খেলে সমস্যা হতে পারে।
অ্যাভোকাডো তেল- অ্যাভোকাডোর তেলের মধ্যে থাকে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম , ভিটামিন ই এবং কে। এই তেল উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি হার্টের জন্যেও কিন্তু ভাল। সামগ্রিক পুষ্টির যোগান পাওয়া যায় এই তেল থেকে।
সোয়াবিন তেল- সোয়াবিন তেলের মধ্যে থাকে ফ্ল্যাভিনয়েড। সেই সঙ্গে আছে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। যা হার্টের সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করে। তবে এই তেলও কিন্তু খুব বেশি গরম করবেন না।