হাল আমলে ব্যবহার বেড়েছে কাঁচ আর স্টিলের, তার আগে রান্নাঘর জুড়ে থাকত কাঁসা-পিতল আপ মাটির বাসনপত্র। প্রস্তর যুগে মানুষ প্রথম পাথরে পাথর ঘষে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করতে শেখে। সেখান থেকে গড়ে উঠে নদীমাতৃক সভ্যতা। ধীরে ধীরে মানুষ কৃষিকাজ শেখে। আর তারপর নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদে, রান্নার প্রয়োজনে শুরু হয় মাটি দিয়ে বাসন বানানো। আজও অনেক বাড়িতেই ব্যবহার করা হয় মাটির হাঁড়ি, কলসি, কড়াই। সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে এখন অনেক অনুষ্ঠানেই মাটির থালা, বাটি ব্যবহার করা হয়। মাটির বাসনে রান্না করার খাবারের যেমন স্বাদ আলাদা তেমনই উপকারিতাও অনেক। এই বাসন থেকে দূষণ ছড়ানোর যেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। কোনও শারীরিক সমস্যাও হয় না। গরমের দিনে এখনও অনেক বাড়িতেই মাটির কুঁজো-কলসি এসবও ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি আর্য়ুবেদ বিশেষজ্ঞ নীতিকা কোহলি তাঁর ইন্সটাগ্রামে মাটির কলসিতে জল খাওয়ার উপকারিতা সম্বন্ধে বিশেষ একটি পোস্ট শেয়ার করেন তাঁর ইন্সটাগ্রামে।
মাটির পাত্রে জল খাওয়ার উপকারিতা-
১.মাটির পাত্রে রান্না করার কিংবা খাবার খাওয়ার একাধিক উপকারিতা রয়েছে। বিপাক ক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে মাটি। যা কাঁচ, প্লাস্টিক, পিতল বা স্টিল করে না। প্লাস্টিকের বোতলে জল রাখা কিংবা প্লাস্টিকের কোনও পাত্রে খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত না। কারণ প্লাস্টিক জল বা খাবারের সঙ্গে রাসায়নিকের বিক্রিয়ায় চট করে বিষক্রিয়ার সুযোগ থাকে।
২.শৌখিনতার খাতিরে অনেকেই কাঁচ বা পোর্সেলিন ব্যবহার করেন। কিন্তু এই সব বাসনের কোনও স্বাস্থ্য উপকারিতা নেই।
৩.প্লাস্টিক বা কাঁচের বোতলে জল রাখলে তা যদি ফ্রিজে রাখা হয় তবেই ঠান্ডা জল পাওয়া যায়। কিন্তু মাটির পাত্রের ক্ষেত্রে সেই ব্যাপার থাকে না। মাটির পাত্র প্রাকৃতিক ভাবেই জল ঠান্ডা রাখে। সেই সঙ্গেল জলের স্বাভাবিক তাপমাত্রাও বজায় রাখে। শরীরকে আরাম দেয়, আর মাটির পাত্রে রাখা জল খেলে গলা ব্যথাও হয় না।
৪.মাটির পাত্রে রাখা জল খেলে সানস্ট্রোকও প্রতিহত করা যায়। যে কারণে এখনও যত জলসত্র করা হয় গরমের দিনে সেখানে এই মাটির পাত্রই ব্যবহার করা হয়।
৫.পেটের সমস্যায় আজকাল প্রায় সকলেই ভুগছেন। মাটির পাত্রে রাখা জল খেলে গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা হয় না। বিশেষত বয়স্করা যদি রোজ মাটির কুঁড়ো বা কলসিতে রাখা জল খান তাঁদের শরীরে কোনও সমস্যা আসবে না। আজকাল বিশেষজ্ঞরাও পেটের সমস্যা রুখতে মাটির পাত্রে রাখা জল খাওয়ার কথা বলছেন।
৬.অনেক বাড়িতে এখনও বাচ্চাদের মাটির হাঁড়িতে বানানো ফভাত খাওয়ানো হয়। এতে ছোট থেকেই হজম ক্ষমতা উন্নত হয়। চট করে পেটের সমস্যা কাবু করতে পারে না।