
আজকের যুগে মিউজিক শোনা, কল করা কিংবা ভার্চুয়াল মিটিং—সব ক্ষেত্রেই ইয়ারফোন বা হেডফোনের ব্যবহার অনিবার্য হয়ে উঠেছে। বাজারে মূলত দুই ধরনের ডিভাইস পাওয়া যায়—এয়ার বাডস (Earbuds) ও হেডফোন (Headphones)। কিন্তু প্রশ্ন হল, কানের স্বাস্থ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের দিক দিয়ে কোনটি বেশি উপযোগী?
এয়ার বাডস কী ও কেমন ব্যবহার?
এয়ার বাডস হলো ছোট, হালকা ও কানে ঢুকিয়ে (in-ear) ব্যবহারযোগ্য এক ধরনের বেতার (wireless) ইয়ারফোন। এটি সহজে বহনযোগ্য ও স্টাইলিশ। সাধারণত ব্যাটারিচালিত এবং চার্জিং কেসসহ আসে। অনেক সময় Noise Cancellation-এর সুবিধাও থাকে।
হেডফোন কী ও কেমন ব্যবহার?
হেডফোন কানের বাইরের দিকে বসে, মাথার ওপর দিয়ে থাকে এবং পুরো কান ঢেকে দেয়। এটি তুলনামূলকভাবে বড় ও ভারী। শব্দ চারপাশ থেকে ভালোভাবে আলাদা করে, ফলে কম ভলিউমেও পরিষ্কার শোনা যায়।
কানের জন্য কোনটি ভালো?
১. স্বাস্থ্যগত দিক থেকে:
হেডফোন কানের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। কারণ এটি কানের বাইরে থাকে এবং শব্দ তরঙ্গ সরাসরি কানের গভীরে প্রবেশ করে না। অন্যদিকে, এয়ার বাডস কানের ভিতরে ঢুকে সরাসরি ইয়ার ড্রামে চাপ ফেলে, ফলে দীর্ঘ সময় বা উচ্চ ভলিউমে ব্যবহার করলে শ্রবণশক্তি হ্রাসের আশঙ্কা থাকে।
২. শব্দের চাপ ও ক্ষতি:
হেডফোনের ক্ষেত্রে শব্দ ছড়িয়ে পড়ে বলে তীব্রতা কমে, কিন্তু এয়ার বাডসে সরাসরি কানে ঢোকে। যদি কেউ বেশি ভলিউমে গান শোনেন, তবে এয়ার বাডস বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।
৩. আরামদায়ক ব্যবহার:
দীর্ঘ সময় ব্যবহারের জন্য হেডফোন আরামদায়ক। কারণ এটি চাপ কম ফেলে ও কানের গহ্বরে কোনও কিছুর প্রবেশ হয় না।
৪. জীবাণুর ঝুঁকি:
এয়ার বাডস নিয়মিত পরিষ্কার না করলে কানে জীবাণু জমতে পারে, যা কানের ইনফেকশন বা ফাঙ্গাল সমস্যার কারণ হতে পারে।
স্টাইল, বহনযোগ্যতা ও দ্রুত ব্যবহার—এই দিক দিয়ে এয়ার বাডস অনেক সুবিধাজনক। তবে স্বাস্থ্য ও কানের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করলে হেডফোন বেশি ভালো। যাঁরা দিনে দীর্ঘক্ষণ ইয়ারফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য হেডফোনই শ্রেয়। তবে যেটিই ব্যবহার করুন, উচ্চ ভলিউম এড়িয়ে চলা ও সময়মতো বিরতি নেওয়া জরুরি।