
মাইগ্রেনের যন্ত্রণায় যাঁরাই ভোগেন, তাঁরাই বোঝেন এর কষ্ট। মাইগ্রেনে একবার মাথার যন্ত্রণা শুরু হলে প্রায় দু’দিন পর্যন্ত চলতে থাকে। মাথার যন্ত্রণার পাশাপাশি বমি বমি ভাব, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা দেয়। মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, হরমোনের ভারসাম্যহীনতার মতো নানা বিষয় মাইগ্রেনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে জীবনধারা উপর নজর দিতে হয়। কিন্তু সাম্প্রতিকতম গবেষণা বলছে, মাইগ্রেনের সমস্যার সঙ্গে হৃদরোগের যোগ থাকতে পারে। পাবলিক লাইব্রেরি অফ সায়েন্স মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, আপনার মাথার এক পাশে যদি গুরুতর যন্ত্রণা হয়, তাহলে এটি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
মাইগ্রেন হল একটি স্নায়ুবিক অবস্থা। মাইগ্রেনে ভুগলে মাথার যন্ত্রণার পাশাপাশি ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। যদিও মাইগ্রেনের উপসর্গ ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হয়। তবে, ক্লাস্টার মাইগ্রেন খুব বিরল রোগ। এতে চোখ থেকে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। তার সঙ্গে চোখ লাল হয়ে যায় এবং জল বেরোতে থাকে। ডাক্তারের পরিভাষায় বলা হয় হাইপোথালামাস।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা বাড়তে বা কমতে থাকে। এটাই ভবিষ্যতে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, শরীরচর্চা না করা, উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো সমস্যাগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। একইভাবে, এই শারীরিক সমস্যাগুলো মাইগ্রেনের জন্যও দায়ী। তাই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাইগ্রেনে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের মতো হার্টের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আবার যাঁদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের মধ্যে মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভাববাও বেশি। এছাড়া যাঁরা ক্লাস্টার মাইগ্রেনে ভুগছেন, তাঁদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়। মাইগ্রেন ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে চাইলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরলের দিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি কমাতে হবে ধূমপান। এছাড়া মানসিক চাপ কমাতে হবে। এই সব বিষয়গুলো হৃদরোগের সঙ্গে ও সম্পর্কিত।