কোভিডের সংক্রমণ যে ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে সিঁদে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ডেল্টার তুলনায় অনেক গুণ দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রন। ফলে দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। একদিনের তুলনায় দ্বিতীয়দিন প্রায় দ্বিগুণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেোন। কোভিড পরীক্ষার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে গত বারের মত এবারও কিন্তু প্রচুর মানুষ রয়েছেন উপসর্গহীন। অর্থাৎ সাধারণ রোগ লক্ষণ থাকছে। সর্দি-কাশি-হালকা জ্বর, নাক দিয়ে জল পড়া। এবার তাঁরা আদৌ কোভিড আক্রান্ত কিনা তা নিজেরাও জানেন না। সেখান থেকেই সংক্রমিত হচ্ছেন বাকিরা। ওমিক্রনের লক্ষণ আর সাধারণ ফ্লু এর লক্ষণের মধ্যে বিশেষ কোনও ফারাক নেই। তবে যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের দীর্ঘ ক্লান্তি, মাথা ব্যথা এসব থাকছে। কিন্তু শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা বা ফুসফুসে সংক্রমণের কোনও লক্ষণ নেই।
ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে খুব বেশি শারীরিক জটিলতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন শোনা যায়নি এমনটাও। এবারের ভাইরাস অনেক বেশি মিউট্যান্ট হয়েছে। ফলে অনেক বেশি মানুষ সহজেই আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার প্রয়োজনীয় কোভিড বিধি মানছেন না। যে কারণে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা
কাদের বলা যায় উপসর্গহীন
উপসর্গহীন বাহক হল ভাইরাসের নীরব বাহক। অর্থাৎ যাঁদের শরীরে রোগ লক্ষণ রয়েছে কিন্তু কোভিডের পরীক্ষা ( RT-PCR) করলে রিপোর্ট আসছে নেগেটিভ। অর্থাৎ তাঁদের দেহে কোভিডের সব রোগ-লক্ষণগুলো প্রকাশিত নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই সব উপসর্গহীন আক্রান্ত মারফতই কিন্তু আরও দ্রুত রোগ ছড়াচ্ছে। যে কারণে উপসর্গ অল্প থাকলেই কোভিড পরীক্ষার কথা বলা হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে সর্দি জ্বরের সমস্যা থাকলে নিজেকে আইসোলেট করে রাখুন। নিজেকে অন্যদের থেকে আইসোলেট না করতে পারলে এই চেন কিন্তু ভাঙা যাবে না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, উপসর্গহীন এবং টেস্ট রেজাস্ট নেগেটিভ আসলে তখনই তাঁদের প্রকৃত অর্থে নেগেটিভ ধরা হবে যদি ঘরের বাতাসে অক্সিজেন স্যাচুরেশন অন্তত ৯৪ শতাংশের বেশি থাকে। তবে এরপরও যদি জ্বর, সর্দি, কাশির লক্ষণ থাকে তাহলে পুনরায় পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। প্রাপ্তবয়স্করাই কিন্তু এই উপসর্গহীন বাহক হন।
কতটা গুরুতর হতে পারে এই উপসর্গহীন বাহকেরা
উপসর্গহীনদের যেহেতু সহজে চিহ্নিত করা যায় না, তার ফলেই কিন্তু দ্রুত ছড়াবে সংক্রমণ। অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হবেন সেই সঙ্গে চাপ পড়বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপরেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এখনও পর্যন্ত ৭০ শতাংশই উপসর্গহীন। যা আরও বেশি করে চাপ বাড়াচ্ছে। তবে যাঁরা উপসর্গহীন তাঁদেরও অন্তত পাঁচদিন আইসোলেশনে থাকা উচিত। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যত সংখ্যক মানুষ নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশই উপসর্গবিহীন (asymptomatic)। যে কারণেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Coronavirus symptoms: সংক্রমিত হওয়ার ঠিক কতদিন পর দেখা দেয় ওমিক্রনের লক্ষণ?