
মুখের দুর্গন্ধ বা হ্যালিটোসিস যেমন অস্বস্তিকর তেমন বিব্রতকর সমস্যা। অনেক সময় আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি না মুখ থেকে দুর্গন্ধের কারণে আশপাশের মানুষ অস্বস্তিতে পড়েন। এটি কিন্তু বড় স্বাস্থ্যে সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়?
১. অপরিষ্কার দাঁত ও মাড়ি – যথাযথ ব্রাশ ও ফ্লস না করলে দাঁতের ফাঁকে খাবারের কণা আটকে যায়। সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া জমে দুর্গন্ধ তৈরি করে।
২. জিহ্বায় জমে থাকা ময়লা – অনেক সময় জিভের উপরিভাগে সাদা আবরণ বা জীবাণু জমে, যা দুর্গন্ধের প্রধান উৎস।
৩. শুষ্ক মুখ – লালা মুখকে স্বাভাবিকভাবে পরিষ্কার রাখে। পর্যাপ্ত লালা না হলে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
৪. পেট ও হজমের সমস্যা – গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা কোষ্ঠকাঠিন্য অনেক সময় মুখের গন্ধের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
৫. খাবারের প্রভাব – পেঁয়াজ, রসুন, কফি, মদ্যপান বা ধূমপানের কারণে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
৬. দাঁতের রোগ বা সংক্রমণ – পায়োরিয়া, দাঁতের পচন বা মাড়ির প্রদাহ থাকলে দুর্গন্ধ আরও বেড়ে যায়।
৭. শারীরিক অসুখ – ডায়াবেটিস, লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
মুক্তির উপায় কী?
১. সঠিকভাবে ব্রাশ ও ফ্লস করুন – প্রতিদিন অন্তত দুইবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে এবং ফ্লস ব্যবহার করতে হবে। দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার বের করলে দুর্গন্ধ অনেকটাই কমে।
২. জিভ পরিষ্কার করুন – জিভের স্ক্র্যাপার বা ব্রাশের পিছনের অংশ দিয়ে জিভ পরিষ্কার করা উচিত। এতে জীবাণু জমতে পারে না।
৩. পর্যাপ্ত জল পান করুন – মুখ শুকনো থাকলে দুর্গন্ধ বাড়ে। সারাদিনে প্রচুর জল পান করলে মুখ আর্দ্র থাকে এবং লালা উৎপাদন ঠিক থাকে।
৪. মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন – অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যাকটেরিয়া কমায় এবং মুখে সতেজতা আনে। তবে কেবল মাউথওয়াশ ব্যবহার যথেষ্ট নয়, এটি ব্রাশের বিকল্প নয়।
৫. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন – রসুন, পেঁয়াজ, ধূমপান ও অ্যালকোহল কমাতে হবে। তার পরিবর্তে ফল, শাকসবজি ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে।
৬. চিনি ছাড়া চুইংগাম চিবোন – এটি লালারস উৎপাদন বাড়ায় এবং অস্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ কমায়।
৭. ডাক্তারের পরামর্শ নিন – যদি নিয়মিত মুখে দুর্গন্ধ থাকে, তবে দন্তচিকিৎসককে দেখানো জরুরি। দাঁতের রোগ, সংক্রমণ বা অন্য শারীরিক অসুখ থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে।