
কলকাতা: খিঁচুনির সমস্যা আশপাশের অনেক মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। সাধারণত নার্ভের রোগের কারণেই এ রকম হয়। তা হলে হাত-পা ছুড়ে, দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। মুখ দিয়েও গ্যাঁজলা ওঠে অনেকের। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে সিজার ডিসঅর্ডারও বলা হয়ে থাকে। মৃগী বা এপিলেপ্সিতে আক্রান্ত যাঁরা তাঁদেরই এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়। এ ছাড়াও অন্যান্য কারণেও খিঁচুনি হতে পারে। মস্তিষ্কের কোনও সমস্যা, আঘাতজনিত সমস্যা, শরীরের লবণের পরিমাণের ভারসাম্য হারালেও তা হতে পারে।
পরিবারের বা আশপাশে কারও খিঁচুনি উঠলে অনেকেই ঘাবড়ে যান। কী করবেন ভেবে পান না। এর জেরে সমস্যাও তৈরি হয়। কারও খিঁচুনি হচ্ছে দেখলে কী করবেন তা জেনে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। যদি দেখা যায় কোনও ব্যক্তির খিঁচুনি উঠেছে, কিন্তু তিনি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে আনা জরুরি। যদি তিনি আগুন বা জলের কাছাকাছি থাকেন, সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাঁকে সরিয়ে আনুন। রাস্তাঘাটে কারও এ রকম দেখলে তাঁকে রাস্তার এক পাশে নিয়ে আসুন। বাড়ির ছাদে কারও এরকম হলে, ছাদের ধার থেকে নিয়ে আসুন। এমনকি দাঁড়িয়ে কারও এ রকম হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে শুইয়ে দিন।
খিঁচুনির সময় অনেকের দাঁত-মুখ কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ঘাবড়ে যাবেন না। তাই বলে মুখে শক্ত কিছু ভরে দেবেন না। মুখ যদি খুলে ধরে রাখা যায় রাখবেন। তবে এ সময় জল খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। তবে মুখে চোখে জল দিতে পারেন। খিঁচুনি উঠলে অনেকের মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হয়। তাই কাত করে শোয়াবেন। যাতে গ্যাঁজলা বের হলে তা শ্বাসনালীতে না চলে যায় এবং মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। রোগীর মাথার নীচে বালিশ দিতে পারেন। কেউ চশমা পড়ে থাকলে তা খুলে দিন, পোশাকও আলগা করে দিতে পারেন। যাঁর হয়েছে তাঁকে ঘিরে ভিড় করে দাঁড়াবেন না। বরং খোলা হাওয়া যাতে তিনি পান, সে রকম ব্যবস্থা করুন।
সাধারণত কয়েক মিনিট পর খিঁচুনি কমে যায়। অনেকের অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারে। খিঁচুনি যদি না থামে, তাহলে হাসপাতালে নিয়ে যান। খিঁচুনির পর জ্ঞান ফিরে এলে তাকে বসান, জল খাওয়ান। এবং পরবর্তীকালে কোনও স্নায়ু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়।