
শরীর অসুস্থ থাকলে কোনও কাজ করার ইচ্ছা যায় না। এমনকী শারীরিক সম্পর্কে আবদ্ধ হতেও ইচ্ছা যায় না। মন ফুরফুরে থাকলে, শরীরে চাঙ্গা থাকলে যৌনতায় মেতে উঠতেও ভাল লাগে। কিন্তু শরীরের কোনও অঙ্গে ব্যথা-যন্ত্রণা কিংবা অন্য অসুস্থতা থাকলে যৌন মিলনেও অনীহা তৈরি হয়। কিন্তু অনেক মানুষেরই প্রশ্ন থাকে যে, জ্বর, সর্দি-কাশি হলে এবং যৌন মিলনে লিপ্ত হলে সঙ্গীর সেই একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটা? এইডস, এসটিডি-এর মতো যৌনবাহিত রোগ এড়াতেই ‘সেফ সেক্স’ নিয়ে জনগণকে সচেতন করা হয়। কিন্তু সাধারণ জ্বর-সর্দিতে যৌন মিলন কতটা সুরক্ষিত তা অনেকেরই অজানা।
সাধারণ জ্বর, সর্দি, কোভিডের মতো রোগ ড্রপলেট ও লালার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ একে-অপরকে চুম্বনের মাধ্যমে আপনার সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আপনার সঙ্গীর যদি সাধারণ সর্দি-কাশি হয়ে থাকে এবং তারপর যদি আপনারা একে-অপরকে চুম্বন করেন তাহলে সঙ্গীর থেকে আপনার মধ্যে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবার আপনি এই ঝুঁকি নেবেন কি না, সেটা সম্পূর্ণ আপনার দায়িত্ব।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে ফের একবার ঊর্ধ্বমুখী দেশের করোনা সংক্রমণ। চলতি সপ্তাহেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের গণ্ডি পার করে গিয়েছে। যদি আপনার সঙ্গী কোভিড আক্রান্ত কি না, তা না জেনেই যদি যৌন মিলনে আবদ্ধ হন, তাহলে ১০০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে আপনারও কোভিড আক্রান্ত হওয়ার। যদি জ্বর থাকে, ভাল বোধ না করলে সেক্স করা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
কোভিডের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসও সংক্রমক। অর্থাৎ আপনার সঙ্গী যদি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তাহলে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়। এখান থেকে আপনারও এই রোগ হতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্ষেত্রে নিজেকে আইসোলেশনে রাখাই ভাল। এটি এমন একটি রোগ যেখানে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে।
সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশিতেও সেক্স না করাই ভাল। এতে যেমন একজনের থেকে অন্যের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই শরীরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। শরীর যদি প্রথম থেকেই দুর্বল থাকে এবং তারপর যৌন মিলনে লিপ্ত হন, এতে দেহে আরও ক্লান্তি দেখা দেয়। এই অবস্থায় যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়ার পর দেহে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি তৈরি হয়। জ্বর আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই ভাল।
মূলত ফ্লু ভাইরাস শরীরে প্রবেশের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তার লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। আর ভাইরাসের প্রভাব ৫-৭ দিন পর্যন্ত থাকে। এরপর আপনি ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। এই অবস্থায় ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত এড়িয়ে যাওয়া উচিত। ইন্টারকোর্স ছাড়াও চুমুর মাধ্যমেও সংক্রমণ সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া এই সময় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দুর্বল থাকে। সুতরাং, যৌনতার মাধ্যমে অন্য রোগেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং সঙ্গীকে সুস্থ করতে তুলতে জ্বর-সর্দি হলে যৌন মিলনে লিপ্ত না হওয়াই ভাল।