
গরম বাড়তে মানুষের মধ্যে বেড়েছে ঠান্ডা পানীয় পানের প্রবণতা। রাস্তায় বেরিয়ে জল তেষ্টা পেলে দোকান থেকে কিনে নিচ্ছেন কোল্ড ড্রিংক্স। বাড়ির ফ্রিজেও বোঝাই করা রয়েছে কোল্ড ড্রিংক্সের বোতল। সন্ধেবেলা কাজ সেরে বাড়ি ফিরে চুমুক দিচ্ছেন ঠান্ডা বিয়ারে। এমনকী উইকএন্ডেও সঙ্গী হচ্ছে ঠান্ডা বিয়ার। কিন্তু গলায় এই ঠান্ডা পানীয় ঢাললেও শরীরের কি কোনও উপকার হচ্ছে? চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের ঠান্ডা পানীয় দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা পূরণ করে না। উল্টে আপনাকে ডিহাইড্রেটেড করে দিতে পারে চিলড বিয়ার।
প্রখর রোদে বেরিয়ে যখন আপনি তৃষ্ণার্ত বোধ করেন, তখন সাধারণ জল, ডাবের জল, ফলের রস, ঘোল ইত্যাদি খাওয়া উচিত। এতে যেমন আপনি হাইড্রেটেড থাকবেন, তেমনই দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকবে। ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা ভীষণ জরুরি। এতে পেশি ও স্নায়ুর সমন্বয় থাকে। তা না হলেই বাড়তে পারে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি।
সোডাযুক্ত মিষ্টি পানীয় ও চিলড বিয়ারের মতো পানীয়তে ইলেক্টোলাইট থাকে না। সুতরাং, এই পানীয় পান করেও কোনও লাভ নেই। বরং এই ধরনের পানীয় পান করার পরও আপনি পেশিতে খিঁচুনি ও ক্লান্তির মতো উপসর্গ লক্ষ্য করতে পারেন। অন্যদিকে, এই ধরনের মিষ্টি পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে সুক্রোজ থাকে। নিয়মিত এই ধরনের পানীয় পান করলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি হয়। আর যদি আপনি প্রিডায়াবেটিক বা ডায়াবেটিসের রোগী হন, তাহলে সম্পূর্ণরূপে এই ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
চাঁদিফাটা রোদে বেরিয়ে ঠান্ডা ও সোডাযুক্ত পানীয় পান করাও উচিত নয়। গরমের মধ্যে হঠাৎ করে নরম ঠান্ডা পানীয় পান করলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গলা বা শ্বাসনতন্ত্র। আমাদের নাক ও গলায় অসংখ্য সরু সরু নালির মতো অংশ বা ‘সিলিয়া’ থাকে। গরমের মধ্যে এই ধরনের পানীয় পান করলে এই সব সিলিয়া নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এর জেরেই আপনি বাড়ে সর্দি-গর্মির সমস্যা। তার সঙ্গে টনসিলাইটস, ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আপনি যদি ঘন ঘন এই ধরনের সোডাযুক্ত মিষ্টি পানীয় পান করেন তাহলে বেড়ে যেতে পারে ওজন। এই ধরনের পানীয় স্থূলতার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। তার উপর বাড়ে হৃদরোগের আশঙ্কাও। এমনকী নিয়মিত ঠান্ডা পানীয় পান করলে বাড়ে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এই ধরনের পানীয়তে ফসফরিক অ্যাসিড থাকে, যা হাড়ে ক্যালশিয়ামের ঘনত্ব হ্রাস করে। ফলে, অল্প চোট পেলেই আপনার হাড় ভেঙে যেতে পারে। তাই গরমে সোডাযুক্ত মিষ্টি পানীয় ও চিলড বিয়ারের মতো পানীয় এড়িয়ে চলুন।