
ফল ও শাকসবজিকে সবসময় স্বাস্থ্যকর ডায়েট হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আপনি যত বেশি ফল ও শাকসবজি খাবেন, রোগমুক্ত জীবন কাটাতে পারবেন। প্রতিটা ফল ও সবজি আপনাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও ফাইবার প্রদান করে, যা ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু যাঁরা ডায়াবেটিসের রোগী, তাঁদের ক্ষেত্রে কি সব ধরনের শাকসবজি বা ফল খাওয়া উচিত? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্লাইসেমিক সূচক কম এবং ফাইবারে ভরপুর, এমন খাবারই বেছে নেওয়া হয় ডায়াবেটিকদের জন্য। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, যে সবজির মধ্যে স্টার্চের পরিমাণ কম বা একদম নেই বললেই চলে, সেসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
সম্প্রতি পুষ্টিবিদ ভক্তি আরোরা কাপুর তাঁর ইনস্টাগ্রাম ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ডায়াবেটিসের রোগীদের সব ধরনের কার্বস ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে, এটা ভুল ধারণা। বরং, স্টার্চের পরিমাণ কম বা একদম নেই এমন শাকসবজি খাওয়া ভাল। এতে ফাইটোকেমিক্যালের (এক ধরনের রাসায়নিক যা উদ্ভিজ্জ খাবারে রং, স্বাদ ও গন্ধ এনে দেয়) মাত্রা বাড়ে এবং নেট কার্বসের (মোট কার্বোহাইড্রেটের লেবেলে থাকা কোনও ফাইবার বা চিনি, অ্যালকোহল বিয়োগ করে ‘নেট কার্বোহাইড্রেট’ নির্ধারণ করা হয়) পরিমাণ কমে। এতে সহজেই রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখা যায় এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতাও ঠিক থাকে।
সব ধরনের কার্বোহাইড্রেটেড একই উপায়ে তৈরি হয় না। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা কার্বোহাইড্রেটেডকে সম্পূর্ণরূপে বাদ না দিলে স্টার্চহীন সবজি বা কম স্টার্চযুক্ত শাকসবজি বেছে নিতে পারেন। পুষ্টিবিদ ভক্তি জানাচ্ছেন, এই ধরনের খাবার ফাইবারে পরিপূর্ণ হয় এবং চিনি ও স্টার্চের পরিমাণ কম থাকে আর পুষ্টিতে ভরপুর হয়। খুব বেশি হলে আপনি এই ধরনের খাবার থেকে ৫ গ্রাম বা তারও কম নেট কার্বস পাবেন। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এটা সেরা খাবার।
স্টার্চহীন সবজি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপযুক্ত। তাছাড়াও এই ধরনের শাকসবজির মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শারীরিক প্রদাহ কমাতে সহায়ক। তাই এই ধরনের আনাজপাতি রোজের ডায়েটে থাকলে আপনি ডায়াবেটিসের পাশাপাশি ক্যানসার, ওবেসিটি, কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকিও সহজে এড়াতে পারবেন।
স্টার্চহীন সবজি হিসেবে যে সব খাবারকে বেছে নেবেন-
পালং শাক, লেটুস, লাল-হলুদ ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ, বাঁধাকপি, জুকুনি, স্কোয়াশ, ব্রকোলি, ফুলকপি, অঙ্কুরিত ছোলা বা মুগ কলাই, কালো ছোলা, সোয়াবিন, মটরশুঁটি, বেগুন, শসা, মাশরুম, গাজর, অ্যাসপারাগাস ইত্যাদি। আর ফল হিসেবে খেতে পারেন স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ও র্যাশবেরি। এগুলোর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এবং রক্তে শর্করার মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে।