দিনের বেশিরভাগ সময়টা এখন আমাদের ডিজিটালেই কাটে। বাসে, ট্রামে চলা পথেও মানুষ ব্যস্ত মোবাইল হাতে। এই দীর্ঘক্ষণ মোবাইল হাতে বসে থাকলে কী হতে পারে, জানেন? স্পন্ডালাইটিস, ওবেসিটি, চোখের সমস্যা এগুলো তো রয়েছে। আপনি ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’র শিকার হতে পারেন। ভাবছেন এমনও রোগ হয়? আলবাত হয়। আর এই রোগে সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ বছরের এক যুবতী। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সর হতে গিয়ে এখন তাঁর সারাদিন কাটছে হুইল চেয়ারে বসে। কারণ দিনের ১৪ ঘণ্টা তিনি ইনস্টাগ্রামেই সময় কাটাতেন।
২৯ বছরের যুবতী ফেনেলা ফক্স ছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সর। ফলোয়ারের সংখ্যা দেড় লক্ষেরও বেশি। দিনের ১৪ ঘণ্টা সময় কাটত তাঁর ইনস্টাগ্রামে। এই পেশা ও নেশাই যে তাঁর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াবে সেটা হয়তো তিনি নিজেও বুঝতে পারেননি। দীর্ঘক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে থাকার বুঁদ তাঁকে ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’তে আক্রান্ত করেছে।
২০২১ সালে প্রথম এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে যুবতীর শরীরে। মাথা ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা। ঠিক যে লক্ষণগুলোকে আপনি স্পন্ডালাইটিস ভেবে হালকাভাবে নেন। এই ব্যথাগুলোই ধীরে ধীরে তীব্র হতে থাকে তাঁর শরীরে। তারপর সেখান থেকে অবস্থার অবনতি শুরু হয়। বমি বমি ভাব, মাথা ঝিমঝিম করার মতো উপসর্গ দেখা দেয় যুবতীর শরীরে।তখন তিনি দ্বারস্থ হন চিকিৎসকদের কাছে। ব্রিটেনে চিকিৎসা শুরু হতে জানা যায়, তিনি ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’তে আক্রান্ত।
মস্তিষ্কের যে অংশ বা ভেস্টিবুলার যে স্নায়ু শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেখানে কোনও রকম গোলমাল দেখা দিলেই দেহে ভার্টিগোর লক্ষণ প্রকাশ পায়। ওই যুবতীর ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহারের কারণে এই সমস্যা ঘটেছিল। ভার্টিগোর ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘুরে যায়, একটানা মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে শারীরিক অস্বস্তি শুরু হয়। তারপর বমি বমি ভাব দেখা দেয়। এমনকী এর ফলে কানের ভিতরের অংশে সংক্রমণও হতে পারে।
তাঁর এই শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে ফক্স জানিয়েছেন, “আমার এমন অবস্থা হয়েছিল যে ঠিকমতো করে হাঁটতে পারছিলাম না। সারাক্ষণ শারীরিক অস্বস্তি হত। সারাদিন ঝিমিয়ে থাকতাম। সবসময় বিছানায় শুয়ে থাকতাম। কিন্তু তারপরেও ফোন ঘাটতাম। এতেই আরও সমস্যা বাড়ছিল।” তারপরেই চিকিৎসকেরা ধরতে পারেন যে ফক্স ডিজিটাল ভার্টিগো নামক রোগে আক্রান্ত। তারপর ফোন ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল ফক্সকে। তারপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে তিনি।