
টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ে মানুষ এখন বেশি চিন্তিত। যেহেতু ডায়াবেটিস ধরা পড়লে খাওয়া-দাওয়া থেকে লাইফস্টাইল, সব কিছুতে বদল আনতে হয়। পাশাপাশি বৃদ্ধি পায় হৃদরোগ এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। কিন্তু টাইপ-১ ডায়াবেটিস আরও শোচনীয় অবস্থা। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে দেহে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন হরমোন উৎপন্ন হয় না। যার জেরে শরীরে কোষে পর্যাপ্ত পরিমাণ শর্করা পৌঁছায় না এবং প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপন্ন হয় না। এই অবস্থাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলা হয়। তার চেয়ে চিন্তার বিষয় হল, এই টাইপ-১ ডায়াবেটিস বাচ্চাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। প্রতি ১ লক্ষ শিশুর মধ্যে ৩ জন শিশু টাইপ ১ ডায়বেটিস রোগের শিকার।
বর্তমান বিশ্বে শিশু-কিশোরদের মধ্যে টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত শিশুদের ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিতে হয়। টাইপ ১ ডায়বেটিস অবস্থাকে প্রতিরোধ করার কিংবা নিরাময় করার কোনও উপায় নেই। টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হলে ডায়েট ও লাইফস্টাইলের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। জাঙ্ক ফুড, কার্বোহাইড্রেটেড খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, শরীরচর্চা করতে হবে। পাশাপাশি প্রথম থেকে শিশুদের মধ্যে টাইপ ১ ডায়বেটিসের লক্ষণগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হলে শিশুদের মধ্যে যে সব লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়-
১) সন্তানের যদি ঘন ঘন তেষ্টা পায়, তাহলে ডায়াবেটিসের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হলে জিভে লালার পরিমাণ কমে যায় এবং দ্রুত গলা শুকিয়ে যায়। এর জেরে বারবার জল তেষ্টা পায়।
২) বেশিরভাগ অভিভাবক মনে করেন, অতিরিক্ত পরিমাণে টিভি দেখলে, মোবাইল ঘাঁটলে বাচ্চার চোখের উপর প্রভাব পড়ে। কিন্তু অনেক সময় ইনসুলিন হরমোন উৎপাদনের মাত্রা কমে গেলে চোখের উপর চাপ পড়ে। শিশুর দৃষ্টি যদি ঝাপসা হতে থাকে, তাহলে হতে পারে আপনার সন্তান টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত।
৩) ঘন ঘন প্রস্রাব করা টাইপ ১ ডায়বেটিসের লক্ষণ। খুদে যদি বারবার টয়লেট করে, তাহলে বুঝবেন তার রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে গিয়েছে। এমন লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
৪) সন্তানের ওজন বেড়ে যাওয়া এবং ওজন কমে যাওয়া দুটোই টাইপ ১ ডায়বেটিসের লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খেয়েও কমতে থাকে ওজন। আবার অনেক ক্ষেত্রে কম খেয়েও হঠাৎ ওজন বাড়তে শুরু করে। এই বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবেন না। ডায়বেটিসের রোগীদের ওজনকে সবসময় ঠিকঠাক রাখতে হবে।
৫) টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হলে আপনার সন্তানের আচরণেও পরিবর্তন আসবে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকবে। খিদের পরিমাণ বেড়ে যাবে। তার সঙ্গে শারীরিক ক্লান্তি থাকবে। খেলাধুলোর প্রতি মন থাকবে না। বাচ্চার মধ্যে এই লক্ষণগুলো এড়িয়ে যাবেন না।