
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা সমস্যা বাড়তে থাকে জীবনে। বিশেষ করে শুরু হয় নানা শারীরিক সমস্যাও। সকালে ঘুম থেকে উঠেই সারা গা, হাত-পা, কোমর বা পিঠে ব্যথা হওয়াও সেই রকম এক সমস্যা। তবে এই সমস্যা কেবল বয়স্কদের মধ্যেই নয় আজকাল কম বয়সীদের মধ্যেও সাধারণ হয়ে উঠছে এই সমস্যা। কিন্তু বিষয়টিকে কিছুই না ভেবে এড়িয়ে যাওয়াটা কিন্তু একদমই উচিত নয়। সেক্ষেত্রে পড়তে পারেন বড় বিপদে। তাহলে কী করবেন? কেন হয় এমনটা? রইল তার সমাধান।
১। ঘুমের ভঙ্গিতে ভুল: ঘুমের সময় যদি মেরুদণ্ড বা ঘাড় সঠিক ভঙ্গিতে না থাকে, তাহলে পেশি ও জয়েন্টে চাপ পড়ে। সেই ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে উঠে পিঠে, শিরদাঁড়ায় বা সারা গায়ের অন্য কোথাও ব্যথা অনুভব হতে পারে।
২। গদির গুণমান: খুব নরম বা খুব শক্ত বেড ম্যাট্রেস হলে অনেক সময় শরীরকে সঠিকভাবে সাপোর্ট পায় না। সেই ক্ষেত্রে কোমর ও গাঁটে ব্যথা হতে পারে।
৩। ঘুমের ঘাটতি বা পর্যাপ্ত বিশ্রাম না হওয়া: পর্যাপ্ত ঘুম না হলেও শরীরের কোষ পুনর্জীবিত হয় না, ফলে সকালে পেশি ও জয়েন্টে ক্লান্তি বা ব্যথা অনুভব হতে পারে।
৪। ফাইব্রোমায়ালজিয়া (Fibromyalgia): এটি এক প্রকার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথাজনিত অসুখ। এর ফলে সারা শরীরেই ব্যথা হয়। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর। সঙ্গে অবসাদ, স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা ইত্যাদি নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫। বাতের সমস্যা বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস: বয়স বাড়লে ক্ষয় হতে থাকে হাড়। জয়েন্টে ঘষা লাগা বা কার্টিলেজ ক্ষয়ের কারণে সকালে ব্যথাও বেশি অনুভূত হয়। তবে এই সমস্যা কিন্তু হতে পারে তরুণদের মধ্যেও।
৬। শরীরে জলশূন্যতা বা ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা: রাতে ঘুমের সময় পর্যাপ্ত জল পান না করলে পেশির সংকোচন ঠিকভাবে হয় না, ফলে ব্যথা হতে পারে। তাই পেশিতে বা অন্য কোথাও ব্যথা হলে বা ক্রাম্প ধরলে বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
৭। অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা: স্ট্রেস শরীরের পেশিকে টানটান করে রাখে, যার প্রভাব সকালে আরও বেশি টের পাওয়া যায়। সারা শরীর আড়ষ্ঠ হয়ে থাকা বা ব্যথার মতো সমস্যা হতে পারে।
কী করবেন?
সঠিক ভঙ্গিতে ঘুমোনোর অভ্যাস করুন। স্বাস্থ্যসম্মত ডক্টর প্রেস্ক্রাইব গদি ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত নরম বা শক্ত গদি ব্যবহার না করাই ভাল। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সকালে হালকা স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করতে পারেন। এতে শরীরের জড়তা কাটে। পর্যাপ্ত জল পান করুন ও পুষ্টিকর খাবার দাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। নিয়মিত হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করুন। যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা প্রচন্ড সমস্যা হয় তাহলে দেরী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। মনে রাখবেন সকালের ব্যথা হালকা উপসর্গ মনে হলেও, অবহেলা করলে তা বড় রোগের আকার নিতে পারে।