
সকালে ঘুম থেকে উঠলেই আমরা দেখি চোখের কোণে জমে রয়েছে এক গাদা নোংরা। আরও ভাল ভাবে বললে, জমে রয়েছে পিচুটি। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন এমন হয় জানেন? কেন ঘুম থেকে উঠলে চোখের কোণে পিচুটি জমে থাকে?
চোখের কোণে থাকে ল্যাকরিমাল গ্রন্থি। সেই গ্রন্থি থেকে ক্রমাগত জল বের হয়ে চোখের মণি ও চোখকে সিক্ত রাখে। এতে বাইরের ধুলোবালির হাত থেকে চোখ রক্ষা পায়। চোখে যে ধুলোবালি পড়ে, সেগুলো ল্যাকরিমাল গ্রন্থি থেকে বের হওয়া জলের মাধ্যমে পিচুটি হিসেবে কোণে জমা হয়।
দিনে পিচুটি কম হয়, কারণ এ সময় চোখ বেশিক্ষণ খোলা থাকে। কিন্তু যখন ঘুমোই বা ঘুম থেকে উঠি, তখন বেশি পিচুটি দেখা যায়। কারণ, অনেকক্ষণ চোখ বন্ধ থাকায় ল্যাকরিমাল গ্রন্থি থেকে বেশি পরিমাণে জল বের হয়ে পিচুটি তৈরিতে সহায়তা করে।
সাধারণত যাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই, টেলিভিশন বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তাঁদের চোখে চাপ পড়ে। তাঁদের পিচুটি বেশি হতে পারে। আবার অনেক ধুলোবালিতে থাকলেও পিচুটি বেশি হয়। চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে ড্রাই আইজের আশঙ্কাও বাড়ে।
এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়া উচিত?
সকালে ঘুম থেকে উঠে মাঝেমধ্যে পিচুটি জমা সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু যদি দেখা যায়, প্রতিদিনই পিচুটি জমে, চোখের পাতাজুড়ে চটচটে ভাব হচ্ছে সঙ্গে চোখ দিয়ে জল পড়ছে, তখন বুঝতে হবে চোখে সমস্যা হচ্ছে।
অনেক সময় কনজাংটিভাইটিস হলে বা চোখে কোনও সংক্রমণের কারণে এমনটা হয়। অতিরিক্ত ধুলো বা অ্যালার্জেন জমা হলেও চোখ তা বের করে দেয়। বেশি কান্নাকাটি করলে বা চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকলে এমন লক্ষণ দেখা দেয়। তখন চোখে প্রদাহ, যন্ত্রণা বা দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে। এমন সমস্যা হলে অবহেলা না করে চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
সকালে উঠে পিচুটি পরিষ্কার করার জন্য জোরে চোখে যাপ দিয়ে তা ঘষবেন না। আলতো হাতে পিচুটি পরিষ্কার করতে হবে। নরম সুতির রুমাল বা ওয়েট টিস্যু দিয়েও পরিষ্কার করা যায়। সবচেয়ে ভালো হয়, ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিয়ে চোখ পরিষ্কার করলে। তবে পিচুটি পরিষ্কার করতে গিয়ে চোখে ঘষাঘষি করা যাবে না। এতে চোখের পাতা ও আইল্যাশের ক্ষতি হয়। বেশি ঘষলে ক্ষতি হতে পারে কর্নিয়ারও।