
সামান্য ঠান্ডা লাগলেই শুরু হয়ে যায় গলা ব্যথা। ফুলে ঢোল হয়ে যায় টনসিল। ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে, খাওয়া বা কিছু পান করাটা দূরস্থ সামান্য ঢোক গিলতে গেলেও যন্ত্রণা করে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন টনসিলাইটিস ফুলে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়। কিন্তু কী এই টনসিলাইটিস? কেন হয় টনসিলের সমস্যা?
মানুষের শরীরে গলার ভেতর দুই পাশে থাকা দুটি গ্রন্থিই হচ্ছে টনসিল। এটি শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। খাবারের মাধ্যমে বা বিভিন্নভাবে শরীরে যে রোগজীবাণু প্রবেশ করে তা ধ্বংস করে টনসিল মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
টনসিলের সমস্যা হচ্ছে টনসিলাইটিস অর্থাৎ টনসিলের কোনও ধরনের প্রদাহ যদি হয় তখন তাকে টনসিলাইটিস বলা হয়। কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে এটি হয়ে থাকে। টনসিলাইটিস সমস্যা যে কোনও বয়সে হতে পারে। তবে শিশুদের মূলত ৩ থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ছোঁয়াচে। এই রোগ অন্য কারও কাছ থেকে সংক্রমণের কারণে হতে পারে। বিভিন্ন নাম না জানা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে টনসিলাইটিস হতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কাস নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে, যার সংক্রমণের ফলে টনসিলাইটিস হয়।
টনসিলাইটিস যেকোনো ঋতুতেই হতে পারে। তবে শীতকালে এর প্রকোপ বেশি হয়। গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলেও টনসিলের প্রদাহ শুরু হতে পারে।
টনসিলাইটিস মূলৎ দু’প্রকার। একিউট ও ক্রনিক।
একিউট টনসিলাইটিস, হঠাৎ করে একদিন হতে পারে। ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগীই রোগ সারতে।
ক্রনিক টনসিলাইটিস, বেশি হয় আমাদের। ঘনঘন ফিরেও আসে। কিছুদিন পরপরই সংক্রমণ হয়, ব্যথা হয়।
কী করে বুঝবেন টনসিলাইটিস হয়েছে?
গলা ব্যথা হয়, খেতে অসুবিধা হওয়া। জল খাওয়ার সময়, ভাত খেতে, এমনকি মুখের লালা গিলতেও কষ্ট হয়। লালাগ্রন্থি ফুলে যায়। জ্বর হতে পারে। শরীর ম্যাজম্যাজ করে। সর্দি-কাশি, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।
কী ভাবে বাঁচবেন?
গলায় ইনফেকশন বা টনসিলের সমস্যা যাদের আছে তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলা। কারণ সংক্রমিত ব্যক্তির লালা বা থুথুর মাধ্যমে অন্যরাও সংক্রমিত হতে পারেন। ঠান্ডা আবহাওয়ায় সর্তকতা মেনে চলতে হবে। ঠান্ডা খাবার খাওয়ায় সর্তক হতে হবে। কোনও সমস্যা হলে তা ফেলে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।