কথায় রয়েছে, ভারতীয় মশলার গুণেই স্বাস্থ্য থাকবে ফিট। রান্নায় ব্যবহৃত বহু মশলাই স্বাস্থ্যের নানা সমস্যার সমাধান করে নিমেষের মধ্যে। প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের বিভিন্ন মশলা ও ভেষজগুলির উপকারিতার কথা বর্ণিত হয়ে এসেছে। তারমধ্যে তেজপাতা হল অন্য়তম। তেজপাতা সুগন্ধি মশলা। এটি শুধু মশলা হিসেবেই পরিচিত নয়, এর অনেক ঔষধি গুণও আছে। এপ্রিল থেকে মে মাসে গাছে নতুন পাতার আর্বিভাব হয়। স্যুপ, পায়েস, পোলাও ও অন্যান্য সিদ্ধ জাতীয় খাবারে সুগন্ধ যোগ করতে এ পাতা ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন গ্রিসে ঐতিহ্যগত ওষুধ তৈরিতে তেজপাতা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হত। তবে অনেকেই জানেন না যে তেজপাতা গুণেই শরীরের একগুঁয়ে মেদ ঝরে যায় দ্রুত।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, ওজন কমানোর জন্য তেজপাতার জল খাওয়া তার উপকারিতা কাটানোর সর্বোত্তম উপায়। যাঁরা ভাবছেন পরিশ্রম ও ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করে রোগা হবেন, পেটের জেদি মেদ ঝরিয়ে ছিপছিপে চেহারায় ফিরে আসবেন, তাঁরা এই মিরাক্যাল পানীয় খেতে পারেন। তেজপাতার ভেষজ bay leaf waterগুণ যেমন রান্নার মান বাড়িয়ে তোলে, তেমনি ওজন কমানোর জার্নিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তেজপাতা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে তুলতে সাহায্য করে।
তেজপাতার জলের উপকারিতা
তেজপাতার জল তৈরি করবেন কীভাবে? প্রথমে একমুঠো তেজপাতা নিয়ে সেগুলি ফুটন্ত গরম জলে যোগ করতে পারেন। কয়েক সেকেণ্ডের জন্য রান্না করে আভেন বন্ধ করে দিন। পাত্রের উপর ঢাকনা দিয়ে দিন। মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে জলটি ঠান্ডা হতে দিন। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠান্ডা করুন। এরপর প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ মধু যোগ করে এক গ্লাস তেজপাতার জল খানা। দেখবেন কয়েক সপ্তাহ পর ম্যাজিকের মত মেদ ঝরে স্লিম হয়ে গিয়েছেন আপনি।
তেজপাতার জলের উপকারিতা কী কী তা দেখে নিন এখানে….
ফাইবার বেশি- তেজপাতায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। অন্ত্রের গতিবিধি উন্নত করতে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। পেট ভরাতেও সাহায্য করে এটি। তবে অত্যাধিক পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্য়ের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি- জপাতা আপনার স্বাভাবিক হজমশক্তি ফিরিয়ে আনবে। এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেয়। অতিরিক্ত প্রস্রাবের সমস্যা কমায় ও হজম রস তৈরিতে এটি উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তেজপাতায় থাকা এনজাইম দ্রুত খাবার ভাঙতে পারে ফলে যারা অন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য তেজপাতা অনেক উপকারী।
ওজন কমাতে- তেজপাতার জল নিয়মিতভাবে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে হাই-ক্য়ালসিয়াম। তেজপাতা ফ্য়াট বার্নার হিসেবেও পরিচিত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে – একটি গবেষণায় দেখা যায় দিনে অন্তত দু’বার তেজপাতার জল পান করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে। এটি প্রমাণ হয়েছে যে, তেজপাতায় থাকা উপাদান ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছেন তাদের জন্যেও তেজপাতা বেশ উপকারী।
বিপাকে উন্নতি ঘটাতে- প্রতিদিন ক্যালোরি বার্ন করার জন্য তেজপাতার জল খান নিয়মিত। ওজন কমানোর জন্য পরিপাকতন্ত্রকে আগে উন্নতি ঘটানো দরকার। দ্রুত ক্যালোরি বার্ন করতে তেজপাতার গুণের শেষ নেই। ক্য়ালোরি যত বার্ন হবে, তত বেশি মেদ ঝরবে। আর সেই কাজটাই করে তেজপাতা।
অন্যান্য়- তেজপাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন সি। এই ভিটামিনগুলি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তেজপাতার চা শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দেয়। হার্ট সুস্থ রাখতেও এই ভেষজ পাতা খাওয়া খুবই ভাল।