পৃথিবীর কমপক্ষে ২০ শতাংশ মানুষ আজ থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। থাইরয়েড হরমোনের ওঠানামা দেহে একাধিক সমস্যা ডেকে আনে। থাইরয়েড দেহে বিপাক ক্রিয়া ও ইমিউনিটি সিস্টেমকে সচল রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং, এই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা একাধিক শারীরিক সমস্যার জন্য দায়ী। ওজন বেড়ে যাওয়া, চুল পড়া, ঘন ঘন সর্দি-কাশি, ব্রণ, অ্যানজাইটি—এমন নানা সমস্যা দেখা দেয় থাইরয়েডের সমস্যা হলে। তখন ওষুধ খাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।
থাইরয়েড হরমোন দু’প্রকার টি-থ্রি ও টি-ফোর। রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোন থাকে। কোনও কারণবশত রক্তে এই হরমোনের মাত্রা কমে গেলে বা বেড়ে গেলেই থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দেয়। রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে, যে অবস্থা তৈরি হয়, তাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলে। আর এই হরমোনের পরিমাণ কমে গেলে যে শারীরিক অবস্থা তৈরি হয়, তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলে। থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আয়ুর্বেদিক পানীয়ের সাহায্য নিন।
ধনে বীজ, কারি পাতা, শুকনো গোলাপের পাপড়ি, এলাচ, দারুচিনি, মৌরি বীজ আর গ্রিন টি দিয়ে বানিয়ে ফেলুন আয়ুর্বেদিক চা। গ্রিন টিয়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, ধনে, কারি পাতা, গোলাপের পাপড়ি, এলাচ দারুচিনি ও মৌরির মতো উপাদান রক্তে থাইরয়েডের হরমোনের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এই আয়ুর্বেদিক চা মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। কমায় চুল ও ত্বকের সমস্যাও। থাইরয়েডের কারণে মহিলাদের মধ্যে ঋতুস্রাবের সমস্যাও দেখা দেয়। পিরিয়ডের নানাবিধ সমস্যা দূর করতেও সহায়ক এই আয়ুর্বেদিক চা। তাই থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি এই আয়ুর্বেদিক চায়েও চুমুক দিন। বাড়িতে কীভাবে এই আয়ুর্বেদিক চা বানাবেন জেনে নিন।
সসপ্যানে ১ গ্লাস জল গরম বসান। এতে ২ চামচ ধনের বীজ, ৫-৬টি কারি পাতা, ১ চা চামচ শুকনো গোলাপের পাপড়ি, ১টি এলাচ, ১ ইঞ্চি দারুচিনি, ১ চা চামচ মৌরি বীজ ও ১ চা চামচ গ্রিন টি মিশিয়ে দিন। গ্রিন টি মেশানোর আগে বাকি মশলা ও ভেষজ দিয়ে জল ফুটিয়ে নিন। এরপর গ্রিন টি মিশিয়ে চা বানিয়ে নিন। মিশ্রণটি ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিলেই তৈরি আয়ুর্বেদিক চা। খাওয়ার সময়ে মধু মিশিয়ে খান এই চা। এতেই বশে থাকবে থাইরয়েড।