সপ্তাহ দুয়েক আগেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন যে, কোনও মশার লার্ভার জমে রয়েছে কি না তা জানার জন্য টালিনালার দু’পাশ ভাল করে দেখা হবে। টালিনালার দু’পাশে লার্ভা ধ্বংস করতে পুরসভা যৌথ অভিযানে নামবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। শেষ অবধি মেয়রের আশঙ্কাই সত্যি হল। ড্রোন ওড়াতেই জানা গেল টালিনালার দু’পাশে অবাধে বাড়ছে মশার লার্ভা।
শহরে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কোমর বেঁধে নেমেছে কলকাতা পুরসভা। আজ কলকাতায় আক্রান্ত ৫৯ জন। মৃত ০। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ওই ২৫টি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে ‘ফিভার ক্যাম্প’। এর পাশাপাশি ওই এলাকায় মশার লার্ভার উৎস খুঁজতে ড্রোন ওড়ানো ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সোমবার টালিনালার উপর ড্রোন উড়তেই চোখে পড়ল ছোট ছোট গর্তে জমা জলেই বেড়ে চলেছে মশার লার্ভা। জানা গেল টালিনালা ও সংলগ্ন এলাকা ডেঙ্গিপ্রবণ।
ড্রোনে ধরা পড়ে টালিনালার দু’পাশে অসংখ্যা ছোট ছোট গর্ত রয়েছে যেখানে জমে রয়েছে জল। চারিদিকে পড়ে রয়েছে চায়ের ভাড়, ডাবের খোলা। টালিনানার ওই সব জায়গায় মশার লার্ভা রয়েছে কি না, তা ভাল করে দেখা হচ্ছে। পুরসভা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল যে, টালিনালার দু’পাশ বরাবরই ডেঙ্গিপ্রবণ। ড্রোন উড়তেই সেই আশঙ্কা সত্যি হল। ছোট গর্ত, পরিত্যক্ত টায়ার, চায়ের ভাড়, ডাবের খোলায় জমে থাকা জলই ডেঙ্গি মশার আঁতুড়ঘর। সেখানে টালিনালার দু’পাশ ডেঙ্গিপ্রবণ। ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে।
শুধু টালিনালা নয়, উত্তর কলকাতার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুর রড, ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, বেলতলা বস্তি, আহিরীপুকুর ফার্স্ট লেন, ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের এ কে মহম্মদ সিদ্দিকি লেন, নবাব আবদুল রহমান স্ট্রিট, ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালীঘাট রোড, কালী টেম্পল রোড, মহিম হালদার স্ট্রিট, নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিটও ডেঙ্গিপ্রবণ। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, এই সব এলাকায় ক্রমশ বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতাতেও ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে। বিশেষ করে, ইএম বাইপাস লাগোয়া একাধিক ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও টালিগঞ্জ রোড, চেতলা রোড ও নিউ আলিপুরের বিভিন্ন ব্লকে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই ক্রমশ বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ ছাড়া গত পাঁচ বছরে এবার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে। রাজ্যে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং দার্জিলিংয়ের পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা।