খাওয়ার পর পেট জ্বালা, প্রায়শই পেট ব্যথা, পেটে মোচড় দেওয়া, বমি, অ্যাসিডিটির সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। প্রায় ঘরে ঘরেই দেখা যাচ্ছে এই সমস্যা। যদিও এর মূলে রয়েছে আমাদের খাদ্যাভ্যাস। রোজ অনিয়ম, খাবারের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ গ্যাপ থাকলে সেখান থেকেই আসে এই সব সমস্যা। বর্তমানে আলসার হল একটি গুরুতর সমস্যা। আর তাই প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। পেটের সমস্যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলসারে মোড় নিচ্ছে। অধিকাংশ মানুষেরই এই রোগটি বিষয়ে বিশদ কোনও ধারণা নেই। যে কারণে চিন্তা বাড়ছে চিকিৎসকদের। পেটেন যদি নিয়মিত ভাবে বেশি পরিমাণে অ্যাসিড তৈরি হতে থাকে তাহলে সেখান থেকে ডিওডিনামে স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়। পরবর্তীকালে এই ক্ষত থেকেই আলসার হয়। এই ঘা-গুলিকে বলা হয় পেপটিক আলসার। খাদ্যনালীর মধ্যে ঘা হলে সেখান থেকে হজমের উপকারী উৎসেচক নিঃসরণে সমস্যা হয়। পাকস্থলি তখন আয়তনে সংকুচিত হয়ে যায়। পেটের আলসারের জন্য মূলত দায়ী হল হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি। নিয়মিত ভাবে অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ খেলে এই প্রদাহ জনিত সমস্যা বেড়ে যায় অনেকখানি।
পেটে আলসার হলে প্রাথমিক ভাবে কী করণীয়?
পেপটিক আলসার হলে প্রথমে নিজেকেই সতর্ক হতে হবে। প্রায়দিন পেট ব্যথা, পেট জ্বালা, হজমে সমস্যা হলে ব্যথার ওষুধ বা অ্যান্টাসিড না খেয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। কারণ চিকিৎসা ছাড়া পররিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। চিকিৎসক প্রথমে প্রয়োজন অনুসারে পিপিআই, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন এবং অ্যামোক্সিসিলিন গ্রুপের ওষুধ দেন। যা অ্যাসিডের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। যে কারণে অ্যাসিড থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সহজে।
পেটে আলসারের প্রাথমিক লক্ষণ…
ক্রমাগত পেটে ব্যথা
ওজন কমে যাওয়া
ব্যথার কারণে খেতে না পারা
পেটে ফোলা ভাব
অ্যাসিডিটি
রক্তাল্পতা
রক্তবমি
ক্লান্তি
ওষুধ ছাড়াও আলসার নিরাময় করতে যা কিছু খাবেন-
বাঁধাকপি- বাঁধাকপি আলসার নিরাময়ে অনেকখানি ভূমিকা গ্রহণ করে। বাঁধাকপির মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, এছাড়াও বাঁধাকপির মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের গুণ। যা আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে একাধিক সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করে।
মধু- বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে আলসার সারাতে খুবই কার্যকরী হল মধু। মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন এনজাইমও। যা আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষায় সাহায্য করে। রোজ সকালে একগ্লাস ইষদুষ্ণ জলে মধু আর দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খান। এতে আরাম পাবেন।
রসুন- রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যালিসিন। এর শক্তিশালী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সঙ্গে লড়াই করতে পারে। রোজ ২-৩ কোয়া রসুন অবশ্যই খান।
হলুদ- হলুদের মধ্যে থাকে কারকিউমিন। যা রক্তনালীর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে প্রদাহের ঝুঁকি কমায়। হৃদরোগের উপশমেও সাহায্য করে। রোজ গরম জলে কাঁচা হলুদ আর মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।