Liver Cancer: ফ্যাটি লিভার থেকেই হতে পারে মারাত্মক লিভার ক্যানসার! কীভাবে তার মোকাবিলা করবেন?

Liver Cancer: চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা যায়। ফ্যাটি লিভার সাধারণত দু'ধরনের হয়—অ্যালকোহলিক এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। আজকাল মূলত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খারাপ খাদ্যাভ্যাসের কারণে NAFLD বেশি দেখা যাচ্ছে।

Liver Cancer: ফ্যাটি লিভার থেকেই হতে পারে মারাত্মক লিভার ক্যানসার! কীভাবে তার মোকাবিলা করবেন?
Image Credit source: adobe stock

Aug 01, 2025 | 1:18 PM

লিভারের সমস্যা হওয়ার কোনও বয়স নেই। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থাকলে যে কোনও বয়সেই হতে পারে এই সমস্যা। বিশেষ করে এইসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হল ফ্যাটি লিভার। রোজ বেশি তেল মশলাযুক্ত খাবার খেলে, মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে বাড়ে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

শুরুর দিকে তেমন বড় কোনও সমস্যার কারণ না হলেও সময়ের সঙ্গে ফ্যাটি লিভার কিন্তু ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। যেমন ধরুন সিরোসিস অব লিভার বা লিভার ক্যানসারের মতো জটিলতাও তৈরি হতে পারে। যা কিন্তু বেশি বাড়বাড়ি হলে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা যায়। ফ্যাটি লিভার সাধারণত দু’ধরনের হয়—অ্যালকোহলিক এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। আজকাল মূলত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খারাপ খাদ্যাভ্যাসের কারণে NAFLD বেশি দেখা যাচ্ছে।

মূল কারণ হল স্থূলতা, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, অলস জীবনযাপন, তেল-চিনি ভর্তি খাবার খাওয়া, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। সাধারণত এর উপসর্গগুলির মধ্যে থাকে—অতিরিক্ত ক্লান্তি, ডান দিকের পেটের ওপরের দিকে হালকা ব্যথা বা ভার লাগা, খিদে কমে যাওয়া, ওজন হ্রাস। এই রোগের জটিলতা বাড়লে হতে পারে লিভারে প্রদাহ (স্টিয়াটোহেপাটাইটিস), ফাইব্রোসিস , সিরোসিস (লিভারের মারাত্মক ক্ষতি), এমনকি লিভার ফেইলিওর বা ক্যানসার পর্যন্ত।

লিভার ক্যানসার কেন হয়?

লিভার ক্যানসার হয় যখন লিভারে কোষ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। সবচেয়ে সাধারণ ধরনটি হল হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা। লিভার থেকেও শুরু হতে পারে ক্যানসার আবার অন্য কোনও অঙ্গে থেকেও ছড়াতে পারে। এর নেপথ্যে প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে—ক্রনিক হেপাটাইটিস বি বা সি সংক্রমণ, সিরোসিস, অযত্নে থাকা ফ্যাটি লিভার, অতিরিক্ত মদ্যপান, দীর্ঘমেয়াদি লিভারের ক্ষতি, এবং আফ্লাটক্সিনের মতো বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শ। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে—ডানদিকের পেটের ওপরের অংশে ব্যথা, ওজন কমে যাওয়া, পেট ফুলে যাওয়া, চোখ ও ত্বকে হলুদ ভাব (জন্ডিস), খিদে না পাওয়া, অল্প খেলেই পেট ভরে যাওয়া ইত্যাদি। চিকিৎসা না হলে ক্যানসার শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে, অথবা লিভার সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যেতে পারে। দেরিতে ধরা পড়লে চিকিৎসাও কঠিন হয়ে যায়। তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়া জরুরি।

ফ্যাটি লিভার থেকেও হতে পারে লিভার ক্যানসার?

নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার সিরোসিস অনেক সময় লিভার ক্যানসারে পরিণত হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের কারণে লিভারে ক্রমাগত প্রদাহ হতে থাকে। ফলে ধীরে ধীরে জমে যায় ফাইব্রোসিস, এবং পরে দেখা যায় সিরোসিস। এই স্থায়ী ক্ষতি লিভারে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে, যা পরে ক্যানসারে পরিণত হতে পারে। যতদিন এই প্রদাহ চলতে থাকে, তত বেশি বাড়ে ক্যানসারের ঝুঁকি।

NAFLD প্রতিরোধে ও লিভার ভাল রাখার জন্য কিছু জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক ওজন বজায় রাখা, বেশি করে তাজা ফল, শাকসবজি ও হোল গ্রেইন খাবার খাওয়া, জাঙ্ক ও তেল-মশলা দেওয়া খাবার কম খাওয়া, টিনজাত ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপান পরিত্যাগ করতে হবে। ডায়াবেটিস, স্থূলতা বা পারিবারিক ইতিহাস থাকলে নিয়মিত লিভার পরীক্ষা করতে হবে। এখনই যদি কোনও সমস্যা না-ও থাকে, ভবিষ্যতের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তাই, সুস্থ জীবনযাপন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিয়ে আপনি লিভার ক্যানসার এড়াতে এবং লিভারকে রক্ষা করতে পারেন।