Fertility: প্রতিদিন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেও সন্তান আসছে না? এখনই বন্ধ করুন এই ৫ কাজ
Planning A Baby: বিয়ের পর কোল আলো করে সন্তান আসবে এমনটাই ভাবেন বেশিরভাগ দম্পতি। তবে শারীরিক সংসর্গের পরেও বহু দম্পতিই বাবা-মা হতে পারেন না। কেন এমন হয়? জানা যাক—
একটা সময় ছিল যখন এক একজন দম্পতির (Couple) একাধিক সন্তান থাকত। তবে আধুনিক যুগে জীবনধারণ এতটাই কঠিন হয়ে পড়েছে যে বহু দম্পতিই ‘আমরা দুই, আমাদের এক’ নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। সমস্যা হল, আজকাল সন্তানধারণ (Pregnancy) করা আর আগের মতো সহজ নেই। প্রথমবারের স্বাভাবিক চেষ্টায় সফল হয়েছেন এমন দম্পতির সংখ্যা কিন্তু সত্যিই হয়ে গিয়েছে হাতে গোনা! বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা, প্রচেষ্টার পরেও কোনও কোনও দম্পতিকে নিতে হচ্ছে আইভিএফ-এর (IVF) সাহায্য। তারপরেও কিছু দম্পতি মিসক্যারেজ অথবা ফার্টিলিটি ডিজঅর্ডারের (Fertility Disorder) সম্মুখীন হচ্ছেন। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে শারীরিক কোনও সমস্যা ছাড়াই কিছু দম্পতির বারংবার স্বাভাবিক মেলামেশার পরেও সন্তান আসছে না। কনসিভ করতেই পারছেন না!
চিকিৎসকরা বলছেন, কোনওরকম শারীরিক সমস্যা ছাড়াও কারও কারও বন্ধ্যাত্বর পিছনে দায়ী থাকতে পারে লাইফস্টাইল বা জীবনশৈলী! আর সেই কারণেই সন্তানধারণের স্বপ্ন থেকে যায় অপূর্ণই। তাঁরা সতর্ক করছেন— বহু অবিবাহিত যুবক-যুবতীই ইতিমধ্যে ত্রুটিপূর্ণ জীবনশৈলীর শিকার। বিয়ের আগে থেকেই তাঁদের নানা ভুল কাজকর্মের কারণে পরবর্তীকালে সন্তান আসার ক্ষেত্রেও পড়ে যাচ্ছে প্রশ্ন চিহ্ন। তাই আগে থেকে জানতে হবে কী সেই ভুল কাজ?
ধূমপান: সবার প্রথমে থাকবে এই ভয়ঙ্কর অপকর্মটি। ধূমপানের অভ্যেস একাধিকভাবে সন্তানধারণের পথে বাধা তৈরি করতে পারে। প্রথমত, তামাক সেবন পুরুষদের স্পার্মের গুণগত মানের হানি করে। স্পার্মের সচলতার ক্ষমতাতেও ফেলে নেতিবাচক প্রভাব। মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম্বাণু বা ওভামের সংখ্যা কমায়। ওভামের গুণগত মানের বিপুল ক্ষতি করে। এছাড়া ওভামের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জিনগত সমস্যা তৈরি করার ক্ষমতাও রাখে। স্পার্ম ও ওভামের গুণগত মান খারাপর ঙওয়ার কারণে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের পরেও ভ্রূণ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। এমনকী প্রিম্যাচিওর বার্থ বা স্টিলবার্থের আশঙ্কাও বাড়িয়ে দেয় যার ফলে সন্তান ও মায়ের প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
যৌন রোগ: শারীরিক সংসর্গের সময় সঠিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে দম্পতি আক্রান্ত হতে পারেন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ (এসটিডি)-এ। বন্ধ্যত্বের পিছনে এসটিডি একটি বড় কারণ। গনোরিয়া, ক্লাম্যাইডিয়া-এর মতো সংক্রমণ কিন্তু ফ্যালোপিয়ান টিউবের ক্ষতি করতে পারে যা প্রেগ্যানন্সিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেয়।
প্লাস্টিকের ব্যবহার: হ্যাঁ, ঠিক তাই। মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিকের ব্যবহারও কিন্তু সন্তানধারণে তৈরি করতে পারে প্রতিবন্ধকতা। সমস্যা হল, আধুনিক জীবনে সর্বক্ষেত্রে এখন প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে। আমরা জল খাচ্ছি প্লাস্টিকের বোতলে, খাবার গরম করছি প্লাস্টিকের পাত্রে। প্লাস্টিকের যে কোনও পাত্রে থাকে বিসফেনল নামে বিষাক্ত উপাদান। যা খাদ্যের সঙ্গে মিশে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের হর্মোনের কাজে বাধা তৈরি করে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক কিছু সমীক্ষায়, প্লাস্টিকে থাকা কিছু রাসায়নিকের প্রভাবে এন্ডোক্রিন হর্মোনের কাজে প্রতিবন্ধকতা আসার প্রমাণ মিলেছে। এই ধরনের রাসায়নিকের নাম এন্ডোক্রিন ডিসর্যাপটিং কেমিক্যালস। এই ধরনের রাসয়নিকগুলি ওভারি এবং ব্রেন থেকে ক্ষরিত নানা হর্মোনের কাজে বাধা তৈরি করে বলে জানা যাচ্ছে।
রান্নার বাসনকোশন: আজকাল রান্নার জন্য ননস্টিক কড়াই ও পাত্রের ব্যবহারের চল বেড়েছে। জানলে অবাক হবেন এই ধরনের পাত্র দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার করলে তা থেকে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই ধরনের পাত্র থেকে সায়ানুরিক অ্যাসিড বেরতে পারে যা স্বাভাবিক প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করতে পারে।
মাংস খাওয়া: প্রসেসড রেড মিট খাওয়ার খুব চল হয়েছে আজকাল। প্রসেসড রেড মিট বা প্যাকেটজাত রেড মিটে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ যা দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যের পচন রোধ করে। মানবদেহে এই ধরনের প্রিজারভেটিভের প্রভাব মারাত্মক। এমনকী মাত্রাতিরিক্ত প্রিজারভেটিভ দেওয়া যে কোনও খাদ্যই একটানা খেয়ে গেলে তা মা ও ভ্রূণ— উভয়ের ক্ষেত্রেই হানিকারক প্রভাব ফেলতে সক্ষম। এমনকী আইভিএফ সংক্রান্ত নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ভ্রূণের গুণগত মানও ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই ধরনের খাদ্য খাওয়ার অভ্যেসে। অতএব বেকন, সসেজ, এবং ফ্যাটযুক্ত রেডমিট খাওয়া বন্ধ করুন। বরং পাতে রাখুন স্বাস্থ্যকর প্রাণীজ প্রোটিন যেমন— মাছ, চিকেন ইত্যাদি। চিকেন পছন্দ না হলে শুধু মাছই খেতে পারেন। মাছ অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটি প্রাণীজ প্রোটিনের উৎস। আর খান প্রচুর শাকসব্জি ও মরশুমি ফল।