
ফোন কোথায়? বাড়ির চাবিটা যেন কোথায় রেখেছি? খেয়াল করে দেখবেন, দিনের মধ্য়ে এরকম হাজারটা সাধারণ জিনিস আপনি ভুলে যান। আর যত বয়সটা বাড়ছে, এই ভুলে যাওয়ার রোগটা আরও বাড়ছে। বয়সের দোষ বলে অনেকেই এড়িয়ে যান একে। তবে এটা কি শুধুই বয়সের দোষ? একেবারেই নয়, আপনি ‘সিউডো ডিমেনশিয়া’র (Pseudo-Dementia) শিকার। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন, আপনি যেটাকে বয়সের দোষ বা ভুলো মন বলে ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন, তার পোশাকি নাম আসলে ‘সিউডো ডিমেনশিয়া’। আর সবচেয়ে বেশি কমবয়সীদেরই গ্রাস করছে এই সমস্যা। কিন্তু কেন? জানুন এ বিষয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা…
সম্প্রতি ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-য় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, অতিরিক্ত চাপই প্রধান কাল। অর্থাৎ আজকাল কর্মব্য়স্ত জীবনে মানুষ সবটা সামালাতে গিয়ে অত্যধিক চাপ নিয়ে ফেলছে। চলছে মাল্টিটাস্কিং (Multitasking), যার খারাপ প্রভাবই পড়ছে মস্তিষ্কের উপর। মানসিক চাপের পরিমাণ এতটাই বেড়ে যাচ্ছে যে, আজকাল এর জেরে আজকাল কমবয়সীদের মধ্য়ে দেখা দিচ্ছে এই ধরনের সমস্যা। এই সিউডো ডিমেনশিয়ার সঙ্গে অবশ্য সরাসরি ডিমেনশিয়ার সম্পর্ক নেই, কারণ ডিমেনশিয়ার মতো এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ‘ডিজেনারেশন’ (degeneration) হয় না। এর মূল কারণ হিসেবে, অত্যধিক মানসিক চাপকেই একমাত্র দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর প্রভাবে ভুলে যাওয়া, বাড়তি চিন্তা (Overthinking), মানসিক অবসাদের মতো সমস্যাগুলি মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আজকাল মানুষের আনুষঙ্গিক এত রকমের চিন্তা যেমন, কাজের অত্যধিক চাপ, সামাজিক মর্যাদা (Social Status) বজায় রাখা ইত্যাদি বেড়েছে, তারই ফলস্বরূপ নিজের অজান্তেই এই ধরনের সিউডো ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যাগুলি গ্রাস করছে তাঁদের। এত বিবিধ রকমের তথ্য মাথায় ধরে রাখতে পারছে না মানুষ, ফলে চাপ পড়ছে মস্তিস্কের উপর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের মস্তিষ্ক তিনটি ভাগে কাজ করে। কী সেগুলি? কোনও কিছুতে মনোযোগ দেওয়া, কোনও কিছুকে গ্রহণ করা ও সবশেষে কোনও কিছুকে মস্তিষ্কের মধ্যে ধরে রাখা। এই প্রত্যেকটা কাজ করার জন্য মস্তিষ্ককে আলাদা-আলাদাভাবে কাজ করতে হয়। যখনই মানুষ অত্যধিক মানসিক চাপের মধ্যে থাকে, তখন মস্তিষ্কের এই সাধারণ ক্রিয়াকলাপগুলি ব্যহত হতে থাকে। কাউন্সিলিং বা বিহেভিওরাল থেরাপি এই সমস্যা থেকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। তাই এই ধরনের ভুলে যাওয়ার সমস্যা যদি আপনারও থাকে তবে, এটিকে সাধারণ ব্যাপার ভেবে এড়িয়ে না গিয়ে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।