
মাথাব্যথা খুব সাধারণ এক সমস্যা। মাইগ্রেন, সাইনাস আরও নানা কারণে হতে পারে মাথা ব্যথা। এমনকি সামান্ত ঠান্ডা লাগলেও শুরু হয় মাথাব্যথা। তাই বলে বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। এই মাথা ব্যথাই কিন্তু হতে পারে ব্রেন টিউমারের একদম প্রাথমিক লক্ষণ। যা আরও ভয়ানক হলে ব্রেন ক্যানসারও হয়ে উঠতে পারে। তাই সচেতন থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে বুঝবেন এই মাথাব্যথা মাথার টিউমারের লক্ষণ কিনা? অন্য কোন লক্ষণ দেখলে সাবধান হওয়া উচিত?
চিকিৎসকদের মতে টিউমারের মাথাব্যথা সাধারণ মাথাব্যথার চেয়ে আলাদা হয়। টিউমার হলে সাধারণত ব্যথা সকালে বেশি তীব্র হয়। কাশি হলে বা মাথা নড়াচড়া হলে বাড়ে ব্যথা। সর্বোপরি সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ, প্যারাসিটামল বা অ্যাসপিরিন খেলে এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না।
এমন মাথাব্যথা যদি দিনে দিনে বাড়তে থাকে তার সঙ্গে বমি ভাব বা হঠাৎ বমি হয় যা হজমের কারণে নয়, তবে তা মোটেও ভাল লক্ষণ নয়। মস্তিষ্কের ভেতরে চাপ বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে, যা বড়সড় টিউমারের কারণ হতে পারে। কারো কারও ক্ষেত্রে এই ব্যথার তীব্রতা এতটাই ভয়ানক হয়ে ওঠে যে খাওয়া দাওয়া করা, ঘুমনো দুষ্কর হয়ে ওঠে।
এমন উপসর্গ দেখলে সাবধান হওয়া জরুরি। দেরী না করে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডাক্তারের পরামর্শ মতো এমআরআই (MRI) স্ক্যান বা অনান্য পরীক্ষা করান। মনে রাখবেন এই ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি রোগ শনাক্ত হবে তত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব। চিকিৎসকদের মতে কোনও রোগীর সুস্থ হওয়ার কতটা আশা রয়েছে তার সিংহভাগটাই নির্ভর করে কখন রোগ শনাক্ত হয়ে চিকিৎসা শুরু হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে।
এছাড়াও আচরণ এবং মানসিক পরিবর্তন দেখা যায় –
মস্তিষ্কের সামনের অংশে (frontal lobe) টিউমার হলে ব্যক্তিত্বে সূক্ষ্ম পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। স্মৃতিভ্রংশ বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এগুলো মানসিক চাপ বা বয়সজনিত সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করে যায় অনেকে ঠিকই তবে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এমন লক্ষণ অবহেলা করলে টিউমার আরও বড় হতে পারে। পাকাতে পারে রোগ।
প্রাপ্তবয়স্ক বয়সে হঠাৎ খিঁচুনি হওয়া একটি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। টিউমারজনিত কারণে সিজার হতে পারে—ছোট সময়ের জ্ঞান হারানো থেকে শুরু করে বড় খিঁচুনির মতো। অনেক সময় সিজারই হয় রোগ নির্ণয়ের প্রথম ধাপ। একবারের খিঁচুনিও উপেক্ষা না করে পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।