‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজওর্ডার’কে সংক্ষেপে বলা হয় এডিএইচডি (ADHD)। বিশ্বজুড়ে ক্রমশই বাড়ছে এই সমস্যায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। আজকাল বেশিরভাগ বাচ্চাই ভীষণ রকম জেদি। সেই সঙ্গে থাকে চঞ্চলতাও। বয়স যতই বাড়তে থাকে ততই বাড়ে এই সমস্যাও। কিন্তু অনেক বাবা-মা তা বুঝতে পারেন না যে আদতে এটি একরকম অসুখ। যখন ডাক্তারের কাছে যান তখন অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। সম্প্রতি ‘নিউট্রিশনাল নিউরোসায়েন্স’ জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে, যাঁরা এই অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজওর্ডার-এ ভুগছেন তাদের মধ্যে সিদ্ধীন্ত নেওয়ার কোনও ক্ষমতা থাকে না। যে কোনও কাজ প্রচন্ড তাড়াহুড়োর মধ্যে সারেন। সঙ্গে নিজের আত্মমর্যাদা বোধও কম হয়। ফলে সম্পর্ক থেকে পড়াশোনা- সবেতেই কিন্তু প্রভাব পড়ে। যে কারণে প্রথম থেকে চিকিৎসা শুরু না করলে সমস্যায় পড়তে হয় অভিভাবকদের।
গবেষণার সহ-লেখক এবং দ্য ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিদ আইরিন হাটসু যেমন বলেন, যে সব বাচ্চারা নিয়মিত ভাবে ফল আর শাকসবজি খায় তাদের মধ্যে এই সমস্যা তুলনায় অনেকটাই কম। ৬-১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে সবচাইতে বেশি দেখা যায় ADHD-এর সমস্যা। আর তাই তাদের রোজকার খাবারে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস রাখা খুবই জরুরি। শরীরে বেশ কিছু ভিটামিনের অভাব হলে বিশেষত ভিটামিন বি১২ এর অভাব হলে বাচ্চারা বেশি অমনোযোগী হয়ে যায়। যারা ছোট থেকে সঠিক পুষ্টি পায় না তারা অল্পেই বেশি বিরক্ত হয়ে যায়। সঙ্গে থাকে ক্লান্তিও। এরপর আরও একটি সমীক্ষায় হাটসু বলেন, যাদের ওষুধের পরিবর্থে পুষ্চিকর খাবার খেতে দেওয়া হয়েছিল তাদের শরীর ছিল তুলনায় সুস্থ। সেই সঙ্গে অনেক দ্রুত উন্নতিও করেছে। আর তাই ADHD-এর সমস্যায় বিশেষ এই কিছু খাবার কিন্তু অবশ্যই রাখবেন রোজকার ডায়েটে।
হাই প্রোটিন ডায়েট- যেহেতু স্মৃতিশক্তি বজায় রাকতে সমস্যা হয় তাই রোজকার ডায়েটে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি অবশ্যই রাকবেন। যেহেতু এই সমস্যায় স্মৃতিশক্তি কমে আসে সেহেতু প্রথম থেকেই শরীরে প্রোটিনের প্রয়োজন রয়েছে। বিন, চিজ, ডিম, মাংস, বিভিন্ন বাদাম রাখুন রোজকার ডায়েটে। বাচ্চা স্কুল থেকে ফিরলে একমুঠো করে ড্রাই ফ্রুটস খাওয়ান।
ফল- ফলের মধ্যে রোজ আপেল, আঙুর, কমলালেবু, ন্যাশপাতি, কিউই এসব ফল দিন রোজ। এছাড়াও রোজ একটা করে কলা খাওয়াতে পারলেও খুব ভাল।
ফ্যাটি অ্যাসিড- রোজকার ডায়েটে অবশ্যই রাখুন ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই ফ্যাটি অ্যাসিড সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সামুদ্রিক মাছের মধ্যে। এছাড়াও বাদামেও থাকে ওমেগা৩ ফ্যাটিন অ্যাসিড। তবে ADHD এর সমস্যা হলে কার্বোহাইড্রেটস একেবারেই এড়িয়ে চলুন। মধু, চিনি, চাল, আলু এসব একেবারেই বাদ রাখতে হবে রোজকার খাবার থেকে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।