যে কোনও অনুষ্ঠানের শুরুয়াৎ আমাদের দেশে হয় মিষ্টিমুখ দিয়েই। বিয়েবাড়ি, জন্মদিন, পুজো-পার্বণ একটু মিষ্টিমুখ ছাড়া চলে নাকি। পরীক্ষায় ভাল ফল করলেও মিষ্টি আবার ভাল কোনও খবরেও মিষ্টি- শরীরের জন্য যতই ক্ষতিকর হোক না কেন মিষ্টির কদর কিন্তু সর্বত্র। আজ নয়, সেই কোন শতাব্দী থেকে মণ্ডা-মিঠাই খাওয়ার চল রয়েছে। এখনও এমনও অনেকে আছেন যাঁরা চায়ে নূন্যতম মিষ্টি ছাড়া খেতেই পারেন না। যতই মিষ্টি খেতে চিকিৎসকরা, পুষ্টিবিদরা মানা করুক না কেন মিষ্টির লোভ এড়িয়ে যাওয়া খুবই মুশকিলের। শুধু মিষ্টি নয়, কেক, বিস্কুট, কুকিজ থেকে শুরু করে যে কোনও প্যাকেটজাত খাবারের মধ্যে চিনি থাকে।
ব্রেকফাস্টে অনেকেই মুজলি, ফ্লেভারড কর্নফ্লেক্স এসব খান। আবার অনেকে আছেন যাঁরা নিয়মিত রুটি, পাঁউরুটি, প্রোটিন বার এসব খান। তবে এই ফ্লেভারড দই, মধু, কেচআপ এসব মোটেই দোকান থেকে বেশি কিনে খাবেন না। পুষ্টিবিদ ভক্তি কাপুর সম্প্রতি তাঁর ইন্সটাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন। সেখানেই তিনি বলেছেন এই সব খাবারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ চিনি থাকে। যা শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। কারণ অতিরিক্ত চিনি থেকে বিভিন্ন অঙ্গের যেমন ক্ষতি হয় তেমনই মানসিক রোগও আসতে পারে।
আসলে চিনি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপর প্রভাব ফেলে। আর তাই চিনি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে মস্তিষ্ক ঠিক ভাবে কাজ করে না। একই সঙ্গে উদ্বেগ, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বিরক্তি, অকারণে রেগে যাওয়া এসব নানা সমস্যা হতে পারে। আর দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকলে পরবর্তীতে অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকি বাড়ে।
বেশি চিনি খেলে দৃষ্টিশক্তির উপরও প্রভাব ফেলে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়লে ঝাপসা দৃষ্টি, গ্লুকোমা, ছানি পড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে রেটিনোপ্যাথির সমস্যা হয়। এমনকী যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে সেখান থেকে অন্ধত্বও আসতে পারে।
রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়লে ইনসুলিন ক্ষরণ ঠিকমতে হয় না। ফলে ত্বকের প্রদাহ, ব্রণ, সোরিয়াসিস, একজিমার মত একাধিক সমস্যা হয়। চিনি ত্বকের কোলাজেনকে ভেঙে দেয়। যে কারণে বলিরেখা বেশি পড়ে। ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা হয়। চিনি বেশি খেলে দাঁতেরও ক্ষতি হয়। দাঁতে ক্যাভিটি হয়, মাড়িতে সংক্রমণ হয়। এছাড়াও বেশি মিষ্ট প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। যে কারণে অন্ত্রে ক্ষত তৈরি হতে পারে।