দেশজুড়েই মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি জনিত সমস্যা। পুরুষেরাও কম-বেশি এই রোগের শিকার হন। ডাক্তারি পরিভাষায় একে অ্যানিমিয়া বলে। আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ এবং পুষ্টি না পেলে তখনই শরীরে দেখা দেয় একাধিক সমস্যা। রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে নীচে নেমে গেলে সেটাই রক্তাল্পতা। ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হলেও শরীরে স্বাভাবিকভাবে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ হল— পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩.৮ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ ডেসিলিটার। মহিলাদের ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ ডেসিলিটার।
হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে শরীরের প্রচুর পরিমাণে আয়রনের প্রয়োজন হয়। আর হিমোগ্লোবিন হল একরকম প্রোটিন যা আমাদের লোহিত রক্তকণিকায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হলে ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যায়। সেই সঙ্গে নখের কোন, ঠোঁট, মাড়ি এসবও ফ্যাকাশে দেখায়। আর শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এর সঙ্গে চুল পড়া, নখ ভেঙে যাওয়ার মত সমস্যা হয়। আর হিমোগ্লোবিন কমে গেলেই তখন শরীর অনেক বেশি ক্লান্ত লাগে।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে রোজ তাই খেজুর খেতে পারলে খুব ভাল। খেজুরের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
রোজ পালং শাক খেতে পারলে খুব ভাল। এছাড়া মুসুরের ডাল, ব্রকোলি, মটরশুঁটি এসবও রাখুন ডায়েটে। সেই সঙ্গে মাছ, মাংস, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, পিনাট বাটার, ডাল, বিভিন্ন রকম ড্রাই ফ্রুটস এসবও কিন্তু খেতে হবে।
ফলিক অ্যাসিডও শরীরে লোহিত রক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে। কোনও কারণে যদি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফোলিক অ্যাসিড না থাকে সেখান থেকেও কিন্তু হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে পারে। আর তাই ফলিক অ্যাসিড রয়েছে এমন খাবার বেশি করে খান। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে কলা, বিভিন্ন সবুজ শাক-সবজি, বাদাম, ভাত ইত্যাদি। গরমের দিনে বাজারে প্রচুর পরিমাণ তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। রোজ যদি একটু করে তরমুজ খান তাহলে শরীরে আয়রন আর ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হবে এবং শরীর সুস্থও থাকবে। বেদানাও অ্যানিমিয়া ঠেকাতে খুব ভাল কাজ করে। রোজ একটু করে খেলে শরীরে আয়রন, ক্যালশিয়াম, ফাইবারের চাহিদা মেটে।