
অ্যালোভেরা সবচেয়ে বেশি রূপচর্চায় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই উপাদান বাতের ব্যথা, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা ইত্যাদি দূর করার ক্ষেত্রে দারুণ উপকারী। এখন বয়স বৃদ্ধির আগেই মানুষ হাড়ের সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছে। গাঁটে গাঁটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, ঘাড়ে-পিঠে যন্ত্রণা। মূলত শরীরে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি-এর মতো পুষ্টির অভাব থাকলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে শরীরচর্চার অভাবে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তবে, এমন নয় যে এই ধরনের সমস্যাকে প্রতিরোধ করা যায় না। অ্যালোভেরা হল সেই উপাদান, যা হাড়ের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরার মধ্যে অ্যাসিম্যানান নামের একটি উপাদান রয়েছে, যা মজবুত হাড় গঠনে সাহায্য করে। এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন অ্যালোভেরার জুস পান করতে হবে।
নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস খেলে শরীর স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। প্রথমে একটা তাজা অ্যালোভেরার পাতা নিন। সেটা জলে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এতে অ্যালোভেরার হলুদ তরল পদার্থ বের হয়ে যাবে। এবার পাতা থেকে জেল বের করে নিন। অ্যালোভেরার পাতার এই নির্যাসটাই শরীরের জন্য উপকারী। এবার মিক্সিতে অ্যালোভেরার জেলটা দিন। এতে সামান্য জল দিয়ে জুস বানিয়ে নিন। এবার এই জুস স্বাদমতো লেবুর রস ও নুন মিশিয়ে পান করুন।
অ্যালোভেরার জুস পান করলে শুধু যে বাতের ব্যথার ঝুঁকি কমবে, তা নয়। এটি আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা গড়ে তুলতেও সাহায্য করে। ২০১১ সালের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন অ্যালোভেরার রস পান করলে, আপনি সহজেই ওজন কমাতে পারবেন। তাছাড়া অ্যালোভেরার জুস ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। যার অর্থ হল, ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য দারুন উপকারী অ্যালোভেরার জুস। অর্থাৎ রক্তে শর্করার মাত্রাকে ঠিক রাখতে আপনি নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস পান করতে পারেন।
অ্যালোভেরার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। অ্যালোভেরার জুস পান করলে এটি আপনার শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা এই পানীয় রোজ খেতে পারেন। এছাড়া ত্বকের জন্যও উপকারী অ্যালোভেরার জুস। সাধারণত ত্বকের উপর সরাসরি অ্যালোভেরার জেল লাগানো হয়। কিন্তু অ্যালোভেরার জুস পান করলে আপনার ত্বকের সমস্যা ভিতর থেকে নির্মূল হয়ে যাবে।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয় অ্যালোভেরা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই কাঁটাযুক্ত উদ্ভিদের জেলে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। কোনও কিছু শেখা কিংবা মনে রাখার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় অ্যালোভেরা। এছাড়া আপনি অ্যালোভেরার জুস পান করে বিষণ্ণতার লক্ষণগুলোও কমিয়ে ফেলতে পারবেন।
অ্যালোভেরা জেল মাউথওয়াশ হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটিতে কার্যকর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার জেরে আপনি দাঁতের ক্ষয় এড়াতে পারবেন। মাড়িতে ব্যথা, ফোলাভাব, জ্বালাভাব, দাঁতে ব্যথা, মুখে দুর্গন্ধ সব সমস্যাই নিমেষে দূর করবে অ্যালোভেরা। তাই বন্ধু পাতিয়ে নিন এই ভেষজ উপাদানের সঙ্গে।