
আজকাল ঘুমের সমস্যায় ভুগছে ১৮ থেকে ৮০ সকলেই। ব্যস্ত জীবনযাত্রার দৌড়ে মানুষের ঘুমের সময় কমেছে। তার সঙ্গে পড়েছে ঘুমের মানও। অফিসের কাজ শেষ করে, বই পড়ে উঠে কিংবা সিরিজ দেখে ঘুমোতে যেতে-যেতে রাত দুটোর বেশি বেজে যায়। আবার সকাল ৭টায় অ্যালার্ম বাজার সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে উঠে পড়তে হয়। ৭ ঘণ্টা ঘুম হয়ই না। পাশাপাশি ঘুম গভীরও হয় না। বারবার ঘুম ভাঙতে থাকে। এ বিষয়ে বেশিরভাগ মানুষই সচেতন নন। আর এতেই বাড়ছে নানা রোগের ঝুঁকি। ৭ ঘণ্টা কম ঘুম আপনার দেহে একাধিক রোগ ডেকে আনতে পারে।
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গেলে ৭ ঘণ্টা জরুরি। এই ৭ ঘণ্টা শরীর মেরামতের সময় পায়। কোষ মেরামত হয়, পেশি পুনর্গঠিত হয়, যা আপনাকে সতেজ এবং পুনরুজ্জীবিত অনুভব করায়। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম জ্ঞানীয় ফাংশন ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করতেও সাহায্য করে। যে কোনও সমস্যার সমাধান করার জন্য আপনাকে যে চিন্তাভাবনা করা দরকার, সেটার জন্যও ঘুম দরকার। ঠিকমতো ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। পাশাপাশি আপনার ইমিউনিটি সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করে না। আসলে বিশ্রামের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। ৭ ঘণ্টা কম ঘুম হলে, শরীর সংক্রমণ ও প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত থাকে না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, সর্দি-কাশি, জ্বর ও অন্যান্য সংক্রমণে আপনি সহজেই আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
রাতে ৭ ঘণ্টাও যদি ঠিকমতো ঘুম না হয়, পরদিন সকাল জুড়ে ক্লান্তি থেকে যায়। কাজ করার এনার্জি পান না। সারাদিন ধরে হাই উঠতে থাকে। চোখের পাতায় ঘুম লেগে থাকে। এতে আপনার কাজকর্মেও ব্যাঘাত ঘটে। এতে কোনও চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমতে থাকে। ঘুমের অভাব আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। মুড সুইংয়ের পাশাপাশি অ্যানজাইটি ও ডিপ্রেশনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের সমস্যায় ভোগেন, মানসিক রোগও দেখা দিতে পারে।
ঘুম ও ওজন একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত। ঘুমের অভাবে লেপটিন ও ঘেরলিন নামের দু’টি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে খিদে বেশি পায়। বিশেষ করে উচ্চ-ক্যালোরি এবং চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায়। লেপটিনের মাত্রা কমে গেলে পেট ভরার যে অনুভূতি বা তৃপ্তির যে অনুভূতি তা কমে যায়। ফলে, আপনার অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। তার সঙ্গে ওজনও বাড়তে থাকে।