জ্যৈষ্ঠ মাসেও সেভাবে দেখা নেই কালবৈশাখীর। সুতরাং কাঠফাটা রোদে অতিষ্ঠ বাঙালি। তাপমাত্রা এখন হয়তো আর ৪০-এ নেই। কিন্তু আর্দ্রতাও যে কমার নাম নেই। তার ওপর বাইরে চড়া রোদ। সব মিলিয়ে শারীরিক অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু বাইরে না বেরিয়ে কাজ করা ছাড়া উপায় তো নেই কিছু। তবে এর মধ্যে একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে হাই ব্লাড প্রেশার রোগীদের। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গরমে প্রেশার রোগীদের সমস্যা একটু বেশিই বেড়ে যায়। গরমে অন্যান্য রোগও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে ঠিকই। কিন্তু হাই ব্লাড প্রেশার বা হাইপারটেনশন (Hypertension) হল এমন একটি রোগ, যার যত্ন না নিলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো মারণ রোগ ডেকে আনে। এর পাশাপাশি এই রোগের সঠিক চিকিৎসা না হলে কিডনি, চোখের সমস্যা, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে সতর্ক থাকতেই হবে। কিন্তু জ্যৈষ্ঠের দুপুরে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কীভাবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা?
প্রখর রোদ্দুরে হাই ব্লাড প্রেশার রোগীদের একটু সাবধান থাকতে হবে। কারণ গরমে রক্তনালী স্ফীত হয়ে যায়। এর ফলে আরও বেড়ে যায় রক্তচাপ। তাই সতর্কতা অবলম্বন না করলেই বিপদ। সাধারণত, কড়া রোদে বেরোলে একটু শারীরিক কষ্ট হয়ই। এই কারণে চিকিৎসকেরা সব সময় রোদে ছাতা ও রোদচশমা ব্যবহার করতে বলেন। এর পাশাপাশি রাস্তায় বের হলে সঙ্গে জলের বোতল রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞেরা।
কিন্তু আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে, তা হলে রোদে বেরিয়ে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি কিংবা হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, চোখে অন্ধকার দেখা- এই সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই লক্ষণগুলো অবহেলা করবেন না। এগুলোই উচ্চ রক্তচাপ হঠাৎ করে আরও বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ।
কাঠফাটা রোদে বেরিয়ে যদি শরীর খারাপ করে, তাহলে কী করবেন?
রোদে বেরিয়ে মাথার ব্যথা শুরু হলে বা মাথা ঘোরা অনুভব করলে প্রথমত রোদ থেকে সরে আসুন। রাস্তার ধারে এমন কোনও জায়গায় আশ্রয় নিন যেখানে একটু গরম কম লাগবে। গাছের তলায় কিংবা কোনও দোকানে কিছুক্ষণ বসতে পারেন। এই ক্ষেত্রে শরীরে প্রচণ্ডভাবে অস্বস্তি তৈরি হয়। ভয় পাবেন না। রাস্তা ধারে কোনও শীতল জায়গায় আধ ঘণ্টা-চল্লিশ মিনিট জিরিয়ে নিন। এর মধ্যে জল পান করুন। একটু ঠান্ডা জল হলে শরীরে স্বস্তি মিলবে। এরপরই প্রেশারটা চেক করিয়ে নেবেন। সাধারণত, এই ক্ষেত্রে বিশ্রাম নিলে শরীর ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও যদি আপনার শারীরিক কষ্ট না কমে তাহলে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিন।
আর যে কাজটা কখনওই করতে ভুলবেন না, তা হল প্রেশারের ওষুধ খাওয়া। একদিনও বাদ দেবেন না। কারণ মাত্র একদিন প্রেশারের ওষুধ না খেলেই মারাত্মক ঘটনা ঘটে যেতে পারে আপনার সঙ্গে।