দেহে দু’ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। ‘এইচডিএল’ ও ‘এলডিএল’, যাকে ভাল ও খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়। এইচডিএল-এর মাত্রা যত বেশি থাকবে, শরীরের জন্য ভাল। কিন্তু এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেই ক্ষতি। এই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে রক্তনালিতে জমতে থাকে। এখান থেকেই বাড়ে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি। যে কারণে বাড়তি কোলেস্টেরল নিয়ে চিকিৎসকেরা সবসময় সচেতন থাকতে বলেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেহে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়লেও তার ভ্রূক্ষেপ থাকে না। কারণ অনেকেই এর উপসর্গগুলো চিনতে পারেন না। তাই সময় থাকতে বাড়তি কোলেস্টেরলের লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া দরকার।
১) খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তা ধমনীর মধ্যে চর্বির আস্তরণ তৈরি করে, যার কারণে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। তৈরি হয় ‘প্লাক’। এতেই দেহের বিভিন্ন অংশ যেমন নিতম্ব, পায়ের পাতা ও উরুর পেশিতে ব্যথা হয়। একে ‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ’ বলে।
২) পায়ে ব্যথার পাশাপাশি পায়ের পাতা ফুলে যায়, অসাড় হয়ে যায়। এগুলোও কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। শুধু পা নয়, দেহের বিভিন্ন অংশে স্নায়ু অসাড় হয়ে যাওয়া, খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
৩) চোখের নীচে বা চোখের পাতার উপর সাদা বা হলদেটে ভাব কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। এটি কোলেস্টেরলের সাধারণ লক্ষণ। চোখের পাতার উপর হলদেটে দাগ সহজে দূর হয় না। তাই এই বিষয়ে সচেতন থাকুন।
৪) উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে দেহে সব অংশে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। এতে হৃদযন্ত্রের উপর চাপ পড়ে এবং বুকে ব্যথা হয়। এই একই কারণে অনেক সময় ঘাড়ে ও মাথার পিছনের দিকেও মাঝেমধ্যে একটানা ব্যথা হয়।
৫) রক্তে কোলেস্টেরল জমতে শুরু করলে হৃদযন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। এতে হৃদস্পন্দনও বেড়ে যায়। পাশাপাশি একটু সিঁড়ি ভাঙলে কিংবা দ্রুত হাঁটলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। অনেক সময় নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যায়। এটাও উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ।
৬) মুখভর্তি ব্রণ? হাজার প্রসাধনী ব্যবহার করেও সমাধান পাচ্ছেন না? একবার লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করিয়ে নিন। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড (এক প্রকার কোলেস্টেরল) বাড়লে ত্বকে ব্রণ, র্যাশের সমস্যা দেখা দেয়।
৭) ত্বকের পাশাপাশি নখের উপরও বাড়তি কোলেস্টেরলের লক্ষণ দেখা দেয়। নখের উপর কালচে দাগ দেখা দিলে, বুঝবেন নখের ডগায় বাড়তি কোলেস্টেরল জমছে।