
গাড়িতে চড়লে অনেকেরই বমি বমি ভাব হয়। একে আমরা সাধারণত মোশন সিকনেস বলি। বিশেষ করে দীর্ঘ সফর বা ভিড়ের মধ্যে যাত্রা করলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, অস্বস্তি, অতিরিক্ত ঘাম—এসব উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কিছু সহজ কৌশল মানলে এই সমস্যাকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
১। গাড়ির সামনে বা জানলার ধারে বসলে তুলনামূলকভাবে বমি কম হয়। পিছনের দিকে বা জানালা ছাড়া জায়গায় বসলে হাওয়ার প্রবাহ কম থাকায় অস্বস্তি বেড়ে যায়। সামনের সিটে বসলে রাস্তাটা চোখে দেখা যায়, ফলে মস্তিষ্ক ও চোখের সমন্বয় ঠিক থাকে এবং মাথা ঘোরার প্রবণতা কমে।
২। গাড়ির ভিড়ে প্রচুর ধাক্কা বা ঝাঁকুনি হলে মাথা ঘোরা আরও বাড়ে। তাই চেষ্টা করুন মাথা সোজা ও স্থির রাখতে। গাড়ির হেডরেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে ছোট একটা বালিশ বা গলার বালিশ নিলে ঘাড় ও মাথা সাপোর্ট পায়।
৩। অক্সিজেনের ঘাটতি বা ভ্যাপসা গন্ধ বমির কারণ হতে পারে। তাই সম্ভব হলে জানলা খুলে তাজা বাতাস নিন। যদি এয়ার কন্ডিশন গাড়ি হয়, তবে এ.সি.র হাওয়ার ফ্লো নিজের দিকে রাখুন। এতে শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ হবে ও বমি ভাব অনেকটা কমে যাবে।
৪। খালি পেটে গাড়ি চড়লে বমি হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। আবার অতিরিক্ত ভরপেট খেয়ে উঠলেও সমস্যা হয়। ভ্রমণে ওঠার আগে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার যেমন—টোস্ট, বিস্কুট বা কলা খেতে পারেন। তেলেভাজা, ঝাল বা ভারী খাবার এড়িয়ে চলা ভালো।
৫। ভ্রমণের সময় পর্যাপ্ত জল পান করুন, তবে একসঙ্গে বেশি জল খাবেন না। চাইলে লেবু-জল, আদা চা, বা পুদিনা পাতার শরবত নিতে পারেন। এগুলো হজমশক্তি বাড়ায় ও বমি ভাব কমায়। অনেকের ক্ষেত্রে আদা ক্যান্ডি বা পুদিনা মুখে রাখলে উপকার হয়।
৬। চলন্ত গাড়িতে বই পড়া, মোবাইল দেখা বা অতিরিক্ত সামনে-পেছনে তাকালে চোখ ও কানের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা বমি ভাব বাড়ায়। তাই রাস্তার সোজা দিকে তাকানো বা দূরের কোনো নির্দিষ্ট জিনিসে দৃষ্টি স্থির রাখা ভালো। এতে মাথা ঘোরা কম হয়।
৭। যাদের নিয়মিত ভ্রমণকালে বমি হয়, তারা চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টি-মোশন সিকনেস ট্যাবলেট (যেমন ডমপেরিডন বা সাইনরিলিফ জাতীয় ওষুধ) নিতে পারেন। সঙ্গে শুকনো টিস্যু, পলিব্যাগ ও পুদিনা ক্যান্ডি রাখলে ভিড়ে অস্বস্তির সময় কাজে আসবে।