ইউরিন ইনফেকশন বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) খুবই মারাত্মক একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। দীর্ঘদিন এ সমস্যায় ভুগলে অকেজো হতে পারে কিডনি। এ ছাড়াও মূত্রথলিতে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু জলশুন্যতার কারণেই নয়, ইউটিআই হওয়ার আরও কিছু কারণ আছে। যেগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ না করলে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে।
ইউটিআিই হল এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ। যখন এর ফলে মূত্রনালির নিম্নাংশ আক্রান্ত হয়, তখন তাকে মূত্রথলির সংক্রমণ (বা সিস্টাইটিস) বলে আর যখন এর ফলে মূত্রনালির ঊর্ধ্বাংশ আক্রান্ত হয়, তখন তাকে কিডনির সংক্রমণ (বা পায়েলোনেফ্রাইটিস) বলে।
ইউটিআইয়ের লক্ষণ:
১. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
২. ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ
৩. প্রস্রাবের রং লালচে
৪. প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত
৫. দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব
৬. নারীদের গোপনাঙ্গে ব্যথা
৭. পুরুষদের মলদ্বারে ব্যথা
অবস্থা গুরুতর হলে-
১. পেট ও কোমরের মাঝামাঝিতে ব্যথা অনুভব করা
২. শীত লাগা
৩. জ্বর
৪. বমি বমি ভাব
৫. বমি
যেসব কারণে ইউটিআিই হয়:
১) পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খাওয়ার ফলেই বেশিরভাগ মানুষ এই সংক্রমণে ভোগেন। এক্ষেত্রে জলশূন্যতার কারণে মূত্রথলিতে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন অবশ্যই পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে।
২) নারী-পুরুষ ভেদে অনেকেই টাইট অন্তর্বাস পরেন। যা স্বস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। টাইট অন্তর্বাস ব্যবহারের ফলে যৌনাঙ্গ অতিরিক্ত আর্দ্র অবস্থায় থাকে। যার ফলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়।
৩) প্রস্রাব বা মলত্যাগের পর গোপনাঙ্গ ভাল ভাবে পরিষ্কার না করার কারণেও হতে পারে ইউটিআই। এক্ষেত্রে অনেকেই পেছন থেকে সামনের দিকে মোছেন, যা ভুল পদ্ধতি। এতে জীবাণুর যৌনাঙ্গে প্রবেশ করতে পারে। এ কারণে উচিত সামনে থেকে পেছন দিকে মোছা।
৪) সহবাসের পর অবশ্যই প্রস্রাব করা উচিত। এর ফলে গোপনাঙ্গে থাকা জীবণু প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। এর ফলে ইউটিআিইয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
৫) দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখার কারণেও মূত্রাশয়ে সংক্রমণ ঘটতে পারে। প্রস্রাব বেশিক্ষণ ধরে রাখলে মূত্রাশয়ে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হতে পারে।
৬) অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেই প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে।
৭) মেনোপজের সময়ও নারীদের ইউটিআিইয়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৮) ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ইউটিআিই হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
প্রতিরোধে করণীয়:
১) প্রচুর জল ও তরল খাবার খেতে হবে।
২) ব্যক্তিগত সুরক্ষা বজায় রাখতে পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
৩) অপরিষ্কার পোশাক পরবেন না।
৪) নিয়মিত স্নান করতে হবে।
৫) একই কাপড় না ধুয়ে বেশিদিন পরিধান করা থেকে বিরত থাকুন।
৬) গোপনাঙ্গ পরিষ্কার রাখতে হবে।
৭) একই অন্তর্বাস দীর্ঘসময় ব্যবহার করবেন না।