করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুরা যে কোভিডে আক্রান্ত হয়নি তা নয়, কিন্তু সেই সংখ্যাটা ছিল অনেকটাই কম। তবে এবার নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট (Omicron) কাবু করতে পারে শিশুদের। এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনূর্ধ্ব ১৮-দেরকেই লালচক্ষু দেখাচ্ছে ওমিক্রন।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, কোভিড গাইড লাইন মেনেই দেশ জুড়ে খুলতে শুরু করেছে স্কুল। এতদিন সকলেই অনলাইন ক্লাস করছিল। ফের শুরু হয়েছে অফলাইন ক্লাস। বেশিরভাগ অভিভাবকই বাচ্চাদের একা স্কুলে ছাড়ে না। প্রায় সব বাচ্চার সঙ্গেই থাকেন মা-বাবা। এছাড়াও এতদিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা, ফলে সব সময় বাচ্চারাও যে মাস্ক পরেই থাকবে তা ধরে নেওয়া ঠিক নয়। আর এই পড়ুয়া-অভিভাবক সম্পর্কেই কোভিড ছড়াবে অনেক বেশি। কারণ ১৮ বছর বয়সীরা এখনও কোভিডের কোনও টিকা পায়নি।
AIIMS পটনার চিকিৎসক ডা. সঞ্জীব কুমার যেমন জানিয়েছেন, ওমিক্রন যে শিশুদের উপর বেশি প্রভাব ফেলবে এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিন্তু কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু-কিশোররাই রয়েছে সম্মুখ সমরে। কারণ কোভিডের কোনও টিকাই পায়নি তারা। যে কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, হয়ত কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হবে তারাই। তবে স্কুলের প্রাথমিক বিভাগ এখনই কুলে দেওয়া উচিত নয় বলে মত তাঁর।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কয়েকজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জানান, সেখানে পাঁচ বছর বয়সের নীচে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা গত কয়েকদিনে বেশ বেড়েছে। কয়েকদিন আগেও এত সংখ্যক শিশু কিন্তু হাসপাতালে আসত না। বেশিরভাগেরই জ্বর, সর্দি কাশির সমস্যা। খুব জটিল কোনও সমস্যা না থাকায় সকলেই সুস্থ হয়ে উঠছে। কিন্তু তবুও সতর্ক থাকতে হবে সকলকে। সবথেকে ভাল যদি শিশুদেরও এবার কোভিড টিকাকরণের আওতায় আনা যায়। কারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরে অ্যান্টিবডির প্রয়োজন। এছাড়াও বাচ্চারা যাতে যাবতীয় কোভিড সুরক্ষা বিধি মেনে চলে সেদিকেও কিন্তু নজর দিতে হবে অভিভাবকদেরই।
কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুব তাড়াতাড়ি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। শিশুদের শরীরেও জ্বর, সর্দি-কাশি, সাধঝারণ ঠান্ডা লাগার উপসর্গই থাকবে বলে অভিমত চিকিৎসকদের। এই ব্যাপারে বাচ্চাদের অভিভাবকদের বেশি সচেতন হতে হবে। বারবার হাত ধোওয়া, মাস্ক পরে থাকা এসব বিষয়ে খুবই জোর দিতে হবে। এবং তা কিন্তু মেনেও চলতে হবে। সেই সঙ্গে ছোট এবং বড় উভয়কেই কিন্তু ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। সেইসঙ্গে শিশুদের বেশি করে ভিটামিন, মাল্টিভিটামিন খেতে হবে। ভিটামিন ডি বেশি করে খেতে হবে। কারণ ভিটামিন ডি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: Omicron VS Delta: ডেল্টার সঙ্গে করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের কী ভাবে ফারাক করবেন?