বিশ্বজুড়ে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন। কোভিডের এই নয়া স্ট্রেন এত দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে যে তা ভাঁজ ফেলেছে চিকিৎসকরদের কপালে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট কমিয়ে দিচ্ছে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা। এমনই কিছু অভিযোগ তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে বিশ্বজুড়েই তোরজোড় চলছে বুস্টার ডোজের জন্য আমেরিকায় ইতিমধ্যেই ফাইজারের (Pfizer) তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে অনেককেই। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের চিকিৎসক ক্রেগ স্পেন্সার সম্প্রতি একটি ট্যুইট করেছেন। আর সেখানেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন এই বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
তবে একই কথা বলেছেন তিনিও। ‘কোভিডের পূর্ববর্তী উপসর্গের তুলনায় এই বারের উপসর্গ অনেকটাই কম হালকা। শ্বাস কষ্ট জনিত সমস্যা তেমন নেই। গলা ব্যথা, ক্লান্তি, পেশীর ব্যথা এসব সমস্যা নিয়েই আসছেন বেশিরভাগ। অনেকের ক্ষেত্রে আবার গলা ব্যথা বেশি থাকছে। সব কিছু নিয়েই একটা অস্বস্থি থেকে যাচ্ছে শরীরে। যে কারণে এবার প্রয়োজন বুস্টার ডোজের’। তিনি একথাও বলেন যে, ‘যাঁরা বুস্টার ডোজ নিয়েছেন তাঁদের মধ্যেও কিন্তু অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন ওমিক্রনে। কিন্তু কারোর ক্ষেত্রেই রোগ লক্ষণ তেমন প্রকট নয়’।
যাঁরা দীর্ঘ দিন আগে মর্ডানার ডোজ নিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা অনেকটাই বেশি। অনেকের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি দীর্ঘায়িত হয়েছে। জ্বর বেশি, ক্লান্তি বেশি, সারতেও হয়ত অনেকটা বেশি সময় লেগেছে। কিন্তু শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা কারোরই ছিল না। এমনকী ফুসফুসে সংক্রমণের কথাও শোনা যায়নি। তবে যাঁরা এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের একটা মাত্র ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভয়াবহ হতে পারে ওমিক্রন সংক্রমণ। বাড়তে পারে জটিলতা। এমনটাই মত ডাক্তার স্পেন্সারের। যে কারণে কোভিড টিকা নেওয়া প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই একান্ত জরুরি।
কোভিড সংক্রমণের একেবারে গোড়ার দিকে বেশিরভাগ মানুষ হাসপাতালে এসেছিলেন শ্বাসকষ্ট, জ্বরের মত সমস্যা নিয়ে। সেই সঙ্গে শরীরে কমতে শুরু করেছিল অক্সিজেনের মাত্রা। পরবর্তীতে টিকা দেওয়ার পর শরীরে কোভিড বিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। ছোট্ট এই ভাইরাসের সঙ্গে শরীর লড়তে প্রস্তুত। কিন্তু ওমিক্রনের সংক্রমণ কমিয়ে দিচ্ছে সেই টিকার কার্যকারিতা। কোভিডের দুটো টিকার ডোজ অনেকের ক্ষেত্রেই সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৬ মাস আগে। সেক্ষেত্রে তাঁদের আগেই বুস্টার ডোজের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে মানতে হবে যাবতীয় নিয়ম বিধি। এখন সকলেই রয়েছেন ছুটির মেজাজে। যেখানে মাস্ক পরা কিংবা সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার মতো নিয়ম মানছেন না অনেকেই। আর এতেই বেশি শঙ্কিত চিকিৎসকরা। যে কারণে সোমবারেই দ্বিগুণ হয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্বব্যাপী যে ভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওমিক্রন, তাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। আর তাই অবশ্যই জোরদার নজর দিন টিকাকরণের উপরে। তৃতীয় ডোজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মত আমেরিকার চিকিৎসক মহলের।