
রক্ত পরীক্ষায় কোলেস্টেরলের মাত্রা ধরা পড়লে তবেই নড়েচড়ে বসেন বেশিরভাগ মানুষ। তার আগে কেউই খুব একটা সচেতন নন কোলেস্টেরল নিয়ে। তাছাড়া কোলেস্টেরল নীরব ঘাতকের মতো বেড়ে চলে রক্তে। যদিও আজকাল লাইফস্টাইল ও লাগামহীন খাওয়া-দাওয়ার কারণেই এই কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা কোলেস্টেরল ধরা পড়ার পরও সচেতন নন। একইভাবে, খেয়ে যান মটন, ভাজাভুজি। এটা কি আদৌ স্বাস্থ্যের জন্য ভাল? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কোলেস্টেরল হল রক্তে থাকা এক ধরনের মোম জাতীয় পদার্থ। শরীরে ভাল কোলেস্টেরল তৈরি হওয়া দরকার। কিন্তু খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে বিপদ। পিছু পিছু আসে হৃদরোগের সমস্যা। খারাপ কোলেস্টেরল বাড়লে তা রক্তনালীর ভিতরে জমে। এখান থেকেই হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাই খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা সবসময় ৭০-এর নিচে রাখাই ভাল। ১০০-এর নিচে থাকলেও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিলে, অনেকেই ডায়েট থেকে বাদ দেন রেড মিট। আবার অনেকেই মটনের প্রতি ভালবাসা ছাড়তে পারেন না। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে মটন না খাওয়াই ভাল। রেড মিটে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। এতে আরও বেড়ে যেতে পারে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা। তার সঙ্গে বাড়তে পারে ট্রাইগ্লিসারাইডও। তবে, ছ’মাসে একবার মটন খেলে কোনও ক্ষতি নেই। মাঝেমধ্যে এক-দু’টুকরো মটন খেলে আপনার খুব বেশি ক্ষতি হবে না। কিন্তু এটা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
অনেকের প্রশ্ন থাকে যে, কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে মটনের সঙ্গে চিকেনও কি খাওয়া যাবে না? বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেস্টেরল বাড়লে চিকেন খেতে পারেন। সপ্তাহে দু-একবার চিকেন খেলে কোনও ক্ষতি নেই। চিকেনে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে। এই প্রোটিন পেশির কাজকর্ম সচল রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া চিকেনে চর্বির মাত্রা কম থাকে। তাই এই খাবারে খুব বেশি ক্ষতি নেই।
কোলেস্টেরল থাকলে মাছও খেতে পারেন। মাছের মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাছ খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও এড়ানো যায়। তাই এই খাবার ডায়েট থেকে বাদ দেবেন না। বরং, ডুবো তেলে মাছ ভেজে খাবেন না। চেষ্টা করুন, কম তেলে রান্না করতে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তেলের পরিমাণের উপর নজর দেওয়া জরুরি। কম তেলে তৈরি রান্না খেতে পারেন। বেশি ভাজাভুজি খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। ফাইবার হল এমন এক পুষ্টি, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এর জন্য আপনি ওটস, কিনোয়া, ডালিয়া ইত্যাদি দানাশস্যের তৈরি খাবার খেতে পারেন। খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে শরীরচর্চা করুন। এতেই আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।