২০১৯ সালে যখন প্রথম করোনার ( Coronavirus) হদিশ মেলে তখন কিন্তু আঙুল উঠেছিল চিনের দিকেই। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল চিনের উহান থেকে, এমনটাই মনে করা হয়। তার পর সেই ভারইরাস ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসের উৎস কী, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিস্তর চর্চা চলছিল। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে তদন্তের জন্য ক্রমশ চাপও বাড়ছিল। এবার সেই খোদ উহান থেকেই মিলল করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের ( Covid-19 Variant) হদিশ, যা নাকি এখনও পর্যন্ত পাওয়া ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। এবং এই ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে বাড়বে মৃত্যুর সংখ্যা। প্রতি তিনজন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হবে একজনের। এমনই দাবি করেছেন উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ( Wuhan Scientists)।
এই ভ্যারিয়েন্ট নিওকোভের ( NeoCov)-এর সঙ্গে মিল রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের MERS-এর নামের একটি ভাইরাসের সঙ্গে। এই ভাইরাসটি মূলত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্য দায়ী। ২০১২ এবং ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্ছে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। আর তখন কিন্তি অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায়। এই ভাইরাসের সঙ্গে মিল রয়েছে কোভিডের ভাইরাসের। এবং SARS-CoV-2 এর সঙ্গে MERS-CoV ভাইরাস যুক্ত হয়ে মিউটেশনে হলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে আরও অনেক খানি।
উহানের বিজ্ঞানীরা আরও দাবি করেন, বর্তমান কোভিডের টিকা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে মানুষকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। সম্প্রতি বায়োআরক্সিভ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে এমন তথ্য, যদিও ওই গবেষণাপত্রটির কোনও পুনর্মূল্যায়ন হয়নি এবং কোনও ছাড়পত্রও পায়নি। ফলে তা কতটা সত্য সেই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
বর্তমানে ওমিক্রন যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে এমনিই শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা। প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেল্টার তুলনায় যে তা কয়েকগুণ সংক্রামক তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। কিন্তু এই ওমিক্রনের সঙ্গে MERS-CoV মিলে গিয়ে অভিযোজিত হলেই তার ফল হবে মারাত্মক। নিওকোভের সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে করোনাভাইরাসের। মধ্যপ্রাচ্যে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবেই প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছেন ২০১৫-তে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এক প্রজাতির বাদুড়ের শরীরেও মিলেছে এই ভাইরাস।
তবে স্পুটনিকের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভেক্টর রাশিয়ান স্টেট রিসার্চ সেন্টার অফ ভাইরোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির বিশেষজ্ঞরা এই NeoCov-নিয়ে বৃহস্পতিবার নতুন একটি বিবৃতি জারি করেছেন। তাঁরা বলেছেন ‘চিনা গবেষকরা নতুন তথ্য পেয়েছেন এবং মানুষদের সচেতন করতে এখন থেকেই তাঁরা ভাবছেন, এটি ভাল লক্ষণ। তবে এখনই কোভিডের তেমন পরিস্থিতি আসার কিন্তু কোনও রকম সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে চিনা গবেষকদের আরও অনেক গভীর গবেষণার প্রয়োজন। বর্তমনে বিশ্বজুড়েই সুনামির আকারে আছড়ে পড়েছে ওমিক্রন। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হলেও ডেল্টার তুলনায় রোগলক্ষণ কম। এমনকী মৃত্যুহারও কম। তবে এই ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি সংক্রামক’।
করোনার উৎস নিয়ে প্রথম থেকেই চিনের বিরুদ্ধে আঙুল উঠছিল। এমনও তত্ত্ব উঠে এসেছে যে, এটা নাকি রাসায়নিক অস্ত্র। যদিও সেই তত্ত্বকে সরাসরি খারিজ করে চিন। কিন্তু তার পরেও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থেকেই গিয়েছিল। সেই সঙ্গে এই ভাইরাসের উৎসের তদন্তের দাবি জোরালো হয় আন্তর্জাতিক স্তরে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।