
‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা বাচ্চাদের মধ্যে বাড়ছে। বড় হোক বা ছোট, এই ‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা যে কোনও মানুষের জন্য অস্বস্তিকর। কিন্তু ছোটদের পক্ষে এই ‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা বোঝা আরও কষ্টকর। যদিও বাচ্চাদের মধ্যে ‘ড্রাই আইজ’ বা শুষ্ক চোখ হওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ দায়ী। বাতাসে যে হারে দূষণের মাত্রা বেড়েছে, তাতে বাচ্চাদের মধ্যে শুষ্ক চোখের সমস্যা বাড়ছে। তাছাড়া দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের সামনে বসে থাকার জন্যও শুষ্ক চোখের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বাচ্চাদের মধ্যে শুষ্ক চোখের সমস্যা তৈরি হলে চোখে জ্বালাভাব, চুলকানি হতে থাকে। ক্রমাগত চোখের পাতা পড়তে থাকে। এতে লিখতে বা পড়ার সময় কিংবা খেলার সময় কোনও বিষয়ে মনোযোগ দিতে সমস্যা হয়। কিন্তু বাচ্চারা শুষ্ক চোখের সমস্যা নিজে থেকে বুঝতে পারে না এবং বলতেও পারে না। তাই অভিভাবক হিসেবে আপনাকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি কীভাবে আপনার সন্তানকে শুষ্ক চোখের সমস্যা থেকে সুরক্ষিত রাখবেন, সেটাও জানতে হবে।
বাচ্চাদের মধ্যে শুষ্ক চোখের লক্ষণ:
ঘন ঘন চোখের পাতা পড়তে থাকে। চোখের চারপাশ লাল হতে থাকে। চোখে জ্বালাভাব, চুলকানি হয়। আলোর দিকে তাকানো যায় না। চোখ দিয়ে ক্রমাগত জল পড়তে থাকে। এছাড়া দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকে। এমনকী বই পড়া, লেখালিখি করার সময় মনোযোগ দেওয়া যায় না। এই লক্ষণগুলো বাচ্চার মধ্যে দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বাচ্চাদের মধ্যে শুষ্ক চোখের কারণ:
চোখে কোনও ধরনের অ্যালার্জি থেকে শুষ্ক চোখের সমস্যা জন্ম নিতে পারে। এছাড়া কনজাক্টিভাইটিসে আক্রান্ত হলে, কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করলে, স্ক্রিনের সামনে বেশি সমস্য কাটালে শুষ্ক চোখের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে বায়ুদূষণও শুষ্ক চোখের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। আবার যদি আপনার সন্তানের দেহে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অন্যান্য পুষ্টির ঘাটতি থাকে, সেখান থেকেও শুষ্ক চোখের সমস্যা হতে পারে।
বাচ্চার মধ্যে শুষ্ক চোখের সমস্যা প্রতিরোধ করবেন কীভাবে:
১) চোখে জ্বালাভাব, চুলকানি, জল পড়ার সমস্যা দেখা দিলে বাচ্চাকে ধুলো, ধোঁয়া থেকে দূরে রাখুন। বাচ্চার সামনে ধূমপান করা চলবে না। যেহেতু দূষণের কারণে শুষ্ক চোখের সমস্যা দেখা দেয়, তাই এসব থেকে দূরে থাকাই ভাল।
২) বাচ্চার স্ক্রিন টাইম কমান। এখন বাচ্চারা অনেক বেশি মোবাইল, কম্পিউটার, টিভির সামনে সময় কাটায়। এর জেরেও শুষ্ক চোখের সমস্যা ও দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকে। তাই স্ক্রিনের সামনে যত কম সময় কাটাবে ততই ভাল।
৩) রোদে বেরোলে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করুন। সঙ্গে টুপি পরালেও ভাল। এতে আপনার বাচ্চার চোখ রোদ, ধুলো, ময়লা থেকে রক্ষা পাবে।
৪) কনট্যাক্ট লেন্স এড়িয়ে চলুন। প্রতিদিন সকালে ৫ মিনিট চোখের উপর ভিজে কাপড় বা তোয়ালে রাখুন। তারপর চোখের পাতায় হালকা হাতে মালিশ করুন। এতে চোখের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
৫) সন্তানের দেহে যাতে কোনও পুষ্টির ঘাটতি তৈরি না হয়, তার জন্য খাওয়া-দাওয়ার উপর বিশেষ নজর দিন। এছাড়া শুষ্ক চোখের কোনও লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।