গর্ভবতী মহিলাদের তুলনায় কোভিজে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কম, মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। যদিও এর আগে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছিল গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে কোভিডে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। সেই সময় বেশ কিছু প্রশ্নও উঠেছিল। তাহলে কি গর্ভবতীরা বা যাঁরা স্তন্যপান করান সেই সব মায়েরা আদৌ কোভিডের টিকা নিতে পারবেন কিনা।
United Nations Children’s-এর তরফে যেমন জানানো হয়েছে, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কোভিডে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু জন্মের পরবর্তী সময়ে থেকে যাবে নানা শারীরিক সমস্যা। যেহেতু করোনা ভাইরাসের জন্য পারিপার্শ্বিক নানা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এসেছে সেহেতু বাচ্চাদের মধ্যেও এই প্রভাব থেকে যাবে দীর্ঘদিন। ঠান্ডা লাগা কিংবা শ্বাসের নানা সমস্যা হয়ত থেকে যেতে পারে আজীবন। যদিও সেই সংখ্যাটা কিন্তু খুবই কম। যদিও কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশ কিছু শিশু আক্রান্ত হয়েছিল। করোনার তৃতীয় তরঙ্গে কি সেই সম্ভাবনা আরও খানিকটা বাড়ল?
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভিহেলথের মেডিক্যাল ডিরেক্টর চিকিৎসক প্রীতি গোয়েল যেমন বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে কোভিডের টিকা নির্ভয়ে নিতে পারেন গর্ভবতীরাও। গর্ভবতী মহিলাদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি তেমন থাকে না’। অধিকাংশ গর্ভবতী মহিলারা উপসর্গহীন হতে পারেন বা খুব মৃদু সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। তবে খুব দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের স্বাস্থ্য অবনতি হতে পারে এবং এর ফলে ভ্রুণও প্রভাবিত হতে পারে। তাই সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ও নিজেদের নিরাপদে রাখতে সমস্ত ধরণের সতর্কতা মূলক পদক্ষেপ করা উচিত। ভ্যাকসিনেশনও এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপেরই একটি অংশ। তাই গর্ভবতী মহিলাদের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটাই।
সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ডায়েটেশিয়ান বিধি ধিংরা যেমন বলেন, ‘যেসব মায়েরা স্তন্যপান করান তাঁরাও নির্ভয়ে নিতে পারেন কোভিড টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেই এমন নির্দেশিকা রয়েছে। এছাড়াও কিন্তু মায়েদের মেনে চলতে হবে যাবতীয় কোভিড বিধি’। কারণ টিকা মা ও সন্তানের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে মাকে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কারণ মাযের দুধের মধ্যে দিয়েই পুষ্টি পাবে সন্তান। তাই বারে বারে অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে। বাইরের কোনও খাবার কিন্তু একেবারেই নয়।
চিকিৎসক প্রীতি গোয়েল আরও বলেন, ‘অনেকেই বলেছেন তৃতীয় তরঙ্গে বয়স্কদের পাশাপাশি বাচ্চারাও বেশি আক্রান্ত হবে। কিন্তু এর সঠিক কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা নেই। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ইমিউনিটি বেশি, ফলে তাগের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কম। তবে বাচ্চা যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে মা-বাবাকে উদ্যোগী হতে হবে। কোনও সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযাগ করুন। এছাড়াও শিশুদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। বাচ্চাদেরও অবশ্যই ভ্যাকসিন দেবেন’। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও। তারা যাতে মানসিক দিক দিয়ে ভাল থাকে তা দেখাও কিন্তু মা-বাবার কর্তব্য।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Coronavirus Vs Influenza: উপসর্গে বোঝা দায়, কোভিড আক্রান্ত হওয়ার তুলনায় কি ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভোগা ভাল?