Constipation Problems: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন? এই উপায়ে ঘি আর গরম জল ব্যবহার করে দেখেছেন কি?
Ghee and Hot water: একবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হলে জীবন জেরবার হয়ে যায়। কোনওভাবেই যেন সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে না। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন কনস্টিপেশনে ঘি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে। এমনকী সঠিক উপায়ে ঘি খেলে কনস্টিপেশনের সমস্যা দূর হতে পারে চিরতরে!

কনস্টিপেশন মানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাট্রিনে বসে থাকা। অথচ সব প্রচেষ্টাই সার হয়! পেট খালি হয় না। সারাদিন শরীর জুড়ে থাকে অস্বস্তি, পেট ব্যথা। মেজাজ হয়ে থাকে খিটখিটে। কোনও কাজেই মন বসে না। অনেকের একাধিক ওষুধ খেয়েও রোগ সারে না। কনস্টিপেশন বয়ে বেড়াতে হয় সারাজীবন। কোনও কোনও ব্যক্তির অর্শের মতো সমস্যাও তৈরি হয়। অথচ সত্যিটা হল, আয়ুর্বেদে কনস্টিপেশনের উপশমে সহজ কিছু ওষুধের বর্ণনা রয়েছে। ঘরোয়া এবং সহজসাধ্য ওষুধগুলির বিষয়ে জানলে আপনিও অবাক হবেন! বহু মানুষ এই দেশি উপায়গুলি সম্পর্কে জেনে উপকারও পেয়েছেন। প্রশ্ন হল কী কনস্টিপেশন কেন হয়? এই প্রশ্নের উত্তর একাধিক—
• দীর্ঘসময় একজায়গায় বসে বসে কাজ করার অভ্যেস।
• শরীরচর্চার বিন্দুমাত্র অভ্যেস না থাকা।
• শাকসব্জি খাওয়ার অভ্যেস চলে যাওয়া।
• বেশি পরিমাণে মাংসজাতীয় খাদ্য খাওয়া ইত্যাদি।
উপরিউক্ত কারণগুলির মধ্যে খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিতভাবে কনস্টিপেশনের পিছনে অন্যতম বড় কারণ। বিশেষ করে আধুনিক যুগে সকলের কাছে সময়ের বড় অভাব। ফলে জাঙ্ক ফুড বা সহজে তৈরি করা যায় এমন ফাস্ট ফুড খাওয়ার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কনস্টিপেশনের সমস্যাও বাড়ছে।
তাই কনস্টিপেশন দূর করতে হলে সবচাইতে আগে দরকার পাতে শাকসব্জি রাখা। তার সঙ্গে সেবন করতে হবে ঈষদুষ্ণ জল এবং ঘি।
ঘি এবং ঈষদুষ্ণ জল কীভাবে কনস্টিপেশন তাড়ায়?
ঘি অনেকটা ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক্ট বা পরিপাকতন্ত্রে লুব্রিকেন্ট-এর মতো কাজ করে। এর ফলে কোলনে তৈরি হওয়া মল সহজেই রেকটামের দিকে সরে যেতে পারে। এছাড়া কনস্টিপেশনের পিছনে বড় একটা কারণ হল পর্যাপ্ত মাত্রায় জল পান না করার অভ্যেস। তাই ঈষদুষ্ণ জল পান করলে তা কোলনে তৈরি হওয়া মলের সঙ্গে মেশে ও কঠিন মলকেও নরম করে তোলে। এখানেই শেষ নয়। ঈষদুষ্ণ জল শরীর থেকে অপাচ্য খাদ্যবস্তুকেও বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরাও জানাচ্ছেন, ‘ইনটেসটিনাল ট্র্যাক্ট পিচ্ছিল রাখতে সাহায্য করে ঘি। অপাচ্য খাদ্যবস্তুকে মলের সাহায্যে বের করে দিতে সহায়তা জোগায় ঘি। এর ফলে কনস্টিপেশনের ঝুঁকি কমে।’
এছাড়া প্রজেগ্লাড গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজি নামে এক পোলান্ডের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে একটি সমীক্ষা বিষয়ক প্রবন্ধ। ওই প্রবন্ধ অনুসারে, বিউটেরিক অ্যাসিড নামে এক উপাদানের দুর্দান্ত উৎস হল ঘি। শরীরে বিউটেরিক অ্যাসিড পর্যাপ্ত মাত্রায় প্রবেশ করলে তা অন্ত্রের বিপাকক্রিয়া বাড়ায়। এর ফলে স্টুলের মুভমেন্ট সঠিক থাকে। একইসঙ্গে পেটের ব্যথার সমস্যা দূর হয়। পেট ফাঁপার সমস্যাও চলে যায়। মোট কথা কনস্টিপেশন সংক্রান্ত সব ধরনের সমস্যা উধাও হয়।
ঘি হল প্রাকৃতিক ল্যাকজেটিভ। এখানেই শেষ নয়। ঘি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। ওজন কমাতে সাহায্য করে। অনিদ্রা দূর করে।
কীভাবে খাবেন ঘি এবং ঈষদুষ্ণ জল?
প্রতিদিন সকালবেলা এক গ্লাস গরম জলে এক চামচ ঘি মেশান। ঘি সম্পূর্ণভাবে জলের সঙ্গে মিশে গেলে অপেক্ষা করুন। জল একটু ঠান্ডা হলে খালি পেটে পান করুন।
পরিপাক তন্ত্র, বৃহদান্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত্রের অন্দরের দেওয়াল শুকনো হয়ে গেলে দেখা দিতে পারে কনস্টিপেশন। ফলে ঘি-এর মতো লুব্রিকেটিং উপাদান গ্রহণ করলে তা সম্পূর্ণ পরিপাকতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী প্রমাণিত হয় ও কনস্টিপেশন দূর হয়।
